দিল্লিতে স্বাধীনভাবে থাকলেও … বাংলাদেশে কবে ফিরবেন জানিয়ে দিলেন শেখ হাসিনা

Sheikh Hasina

প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: কোটা ব্যবস্থা নিয়ে দেশ জুড়ে ছাত্র ছাত্রীদের তাণ্ডবে অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়েছিল পড়শি দেশ, বাংলাদেশ। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখন গণআন্দোলনের রূপ নিয়েছিল। শেষে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। আশ্রয় নিয়েছিল ভারতে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির নিরাপদ আশ্রয় থেকেই দলের নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশে কি আর কখনও ফেরা হবে শেখ হাসিনার?

ভারতেই রয়েছেন শেখ হাসিনা

উল্লেখ্য জনবিক্ষোভের জেরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছিল। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ‘রাজাকার’ মন্তব্য করায় পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর আকার ধারণ করেছিল যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা থেকে উত্তরপ্রদেশের হিন্দন বায়ুসেনাঘাঁটিতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। আর তারপরেই গোটা বাংলাদেশ আরও উত্তাল হয়ে পড়েছিল। দেখতে দেখতে এক বছর কেটে গেলেও, আর বাংলাদেশে ফেরেননি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই কারণে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে তবে কি তিনি আর দেশে ফিরবেন না? এবার সেই নিয়ে সরাসরি নিজেই মুখ খুললেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে ফিরতে চান হাসিনা!

গতকাল অর্থাৎ বুধবার সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাক্ষাৎকার পর্বে তিনি বলেন, “দিল্লিতে তিনি স্বাধীনভাবে থাকলেও, অবশ্যই নিজের দেশে ফিরে যেতে চান। তবে তাঁর দল, আওয়ামী লিগকে বাদ দিয়ে যদি কোনও নির্বাচন হয় এবং সরকার গঠিত হয়, সেই সরকারের অধীনে তিনি কখনওই বাংলাদেশে ফিরে যাবেন না।” জানা যাচ্ছে সব ঠিক থাকলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে বাংলাদেশে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার জেরে হাসিনার দল আওয়ামি লিগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। যে কারণে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণাও করেছে তারা। আর সেই আবহেই সংবাদ সংস্থাকে এই বিষয়ে জানান হাসিনা।

আওয়ামী লিগ নিয়ে বড় পদক্ষেপ

বাংলাদেশের নির্বাচন থেকে গত মে মাসেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে শেখ হাসিনার আওয়ামী লিগকে। এই নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। সেই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আগামী সরকারের নির্বাচনী বৈধতা থাকতে হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ আওয়ামী লিগকে সমর্থন করে, তাই তারা ভোট দেবেন না। রাজনৈতিক সিস্টেম চালানোর জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাদ দিতে পারেন না। আমরা আওয়ামী লিগের ভোটারদের অন্য কোনও দলকে সমর্থন করতে বলছি না। আমরা এখনও আশা রাখছি যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং আমাদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে। এছাড়া আওয়ামী লিগের উপরে নিষেধাজ্ঞা শুধু অনৈতিক নয়, বরং এটি আত্ম-পরাজয়ও।”

আরও পড়ুন: ‘দাউদ বম্ব ব্লাস্ট, দেশ বিরোধী কাজ করেনি ও জঙ্গি নয়!’ মমতা কুলকার্নি

উল্লেখ্য গণ আন্দোলনের পর যেভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসতে হয়েছিল শেখ হাসিনাকে এবং পরবর্তীতে দেশের পরিস্থিতি যেদিকে এগিয়েছে, তা নিয়ে বারংবার ইউনূস সরকারের সমালোচনা করেছেন হাসিনা। বাংলাদেশে লাগাতার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। হাসিনা বলেন, “ওই সময় বাংলাদেশে থেকে গেলে আমার জীবন যেমন ঝুঁকিতে পড়ত, আশপাশের মানুষদের জীবনও তেমনি বিপদে পড়ত।“ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছিল, সেই মামলায় আগামী ১৩ নভেম্বর রায় আসতে পারে।

Leave a Comment