উৎসবে বেঁধে দেওয়া হবে ছবি মুক্তির সংখ্যা, টলিউডে নতুন নিয়ম

EMPA

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বছরের বিশেষ কিছু উৎসব, বিশেষ দিনে ছবির মুক্তি নিয়ে একরকম হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রত্যেক প্রযোজনা সংস্থাই চায় ওই সময় নতুন ছবি রিলিজ করতে। তাই এবার সেই সব সমস্যা দূর করতে এবার বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে টলিউড (EMPA)। তৈরি হচ্ছে বাংলা ছবিমুক্তির বার্ষিক ক্যালেন্ডার। কোনও উৎসবকে ঘিরে ছবিমুক্তির সময়ে যাতে টলিউডে আর কোনও গন্ডগোল না বাধে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে ছবিমুক্তির সংখ্যা। একই সঙ্গে কাজের সময়সীমা নিয়েও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হল।

সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন টলিউডের

রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ বুধবার ধর্মতলায় ইম্পার অফিসে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইম্পার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নিসপাল সিং রানে, অঙ্কুশ হাজরা, রানা সরকার, গোপাল মদনানি, নীলরতন দত্তের পক্ষ থেকে নীলাঞ্জন দত্ত, পরিবেশক শতদীপ সাহা-সহ টলিউডের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না দেব ও রাজ চক্রবর্তী। দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হওয়ার পর নির্দিষ্ট কতগুলি নিয়ম আনা হয়েছে। ঠিক হয়, বাংলা ছবির স্বার্থে এক দিনে তিনটির বেশি ছবি মুক্তি পাবে না।

উৎসবের দিনেই মুক্তি পাবে ছবি!

গতকাল অর্থাৎ বুধবার, সংগঠনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে গোটা বছরে ১১টি বিশেষ দিন নির্দিষ্ট করা হবে বাংলা ছবির মুক্তির জন্য। এই বিশেষ দিনগুলির তালিকায় রয়েছে নেতাজি জয়ন্তী, সরস্বতী পুজো, পয়লা বৈশাখ, মে মাসের দুটি পর্যায় (১-১৫ মে ও ১৫-৩১ মে, অর্থাৎ গরমের ছুটি), পবিত্র ইদ, স্বাধীনতা দিবস, দুর্গা পুজো, কালীপুজো এবং ২৫ ডিসেম্বর। যে প্রযোজনা সংস্থা বছরে ৬টি ছবি নিয়ে আসবে, তাদেরই থাকবে সর্বাধিক প্রাধান্য। তারা চারটি উৎসবের দিনে মুক্তির সুযোগ পাবে। এরপর, যারা বছরে চারটি ছবি আনবে, তাদের দুটি বিশেষ দিন দেওয়া হবে। আর যে প্রযোজকরা ২ বা ৩টি ছবি আনবেন, তাদের ভাগ্যে জুটবে একটি উৎসবের তারিখ।

কোন প্রযোজনার হাতে থাকবে কটা ছবি?

এছাড়াও ফেডারেশনের তরফে জানানো হয়েছে যে, কোনো প্রযোজক নির্দিষ্ট উৎসবের ছবি মুক্তির দিনগুলির আগে বা পরে টানা ১৪ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে, নতুন ছবি মুক্তি করতে পারবেন না। এ বছরের বড়দিনে মুক্তি পাবে পূর্বঘোষিত ‘প্রজাপতি ২’, ‘মিতিনমাসি’ এবং শ্রীকান্ত মোহতা-মহেন্দ্র সোনির একটি ছবি। আগামী ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পাবে ‘হোক কলরব’, শ্রীকান্ত-মহেন্দ্রের আরও একটি ছবি এবং ‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’। প্রত্যেকটি ছবি সাফল্য অনুভব করার সুযোগ যাতে পায়, সে কারণেই এই নিয়ম। এছাড়াও তালিকা অনুযায়ী বছরে ছ’টি ছবি প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছে এসভিএফ, সুরিন্দর ফিল্মস, নন্দী মুভিজ। চারটি ছবি বানানোর তালিকায় উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থা, দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া, সুরিন্দর ফিল্মস, ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনের নাম।

আরও পড়ুন: ‘ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা, ডান হাতের চার আঙুল কাটা!’ প্রদীপ করের মৃত্যুতে CBI তদন্তের দাবি

বাড়ানো হল টেকনিশিয়ানদের পারিশ্রমিক

এদিকে বিভিন্ন প্রোডাকশন হাউসের তরফ থেকে পাঠানো তালিকাতে একটিতেও নাম নেই দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার্সের এবং রাজের প্রোডাকশন হাউসের। আর তাই নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। প্রশ্ন করা হয়েছিল পিয়া-স্বরূপকে। তাঁরা জানান, দেবের প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও কিছুই জানানো হয়নি। তিনি যে ক’টি ছবি বানাবেন সেই অনুযায়ী তাঁর নাম তালিকাভুক্ত হবে। একই ভাবে রাজ চক্রবর্তীর পক্ষ থেকেও জানানো হয়নি, বছরে তাঁরা ক’টি ছবি করবেন। তাই এরপরে আরো বাড়ানো হবে নিয়ম। ছোটপর্দার টেকনিশিয়ানদের এদিন ৩৩ শতাংশ পারিশ্রমিক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এবং কাজের সময়সীমা কমিয়ে করা হয়েছে ১৮ ঘণ্টা।

Leave a Comment