প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শীঘ্রই ভোলা, সুমন আর বাসন্তীকে ফেরাতে হবে রাজ্যে! পশ্চিমবঙ্গের বন দফতরের প্রধানকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের Chief Wildlife Warden-কে বিহার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাতিগুলিকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।
ঘটনাটি কী?
মামলা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতি পাচার ঘটনাকে ঘিরে কেপ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল যে, মোটা অর্থের বিনিময়ে ২৪টি হাতি পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেআইনি ভাবে অন্য রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে ভোলা, সুমন এবং বাসন্তী নামে তিনটি হাতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই তিনটি হাতি নাকি আগে নটরাজ সার্কাসে ছিল।
বেআইনিভাবে পাচার করা হয়েছে ভিনরাজ্যে!
২০১৭ সালে নাকি এক উপহারপত্রের মাধ্যমে সার্কাস কর্তৃপক্ষ এই হাতিগুলিকে বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার এক আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যেখানে ২০১৩ সালে নটরাজ সার্কাসের মালিকানার শংসাপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, সেখানে, ২০১৭ সালে তারা কীভাবে হাতিগুলিকে বনদফতরের বিনা অনুমতিতে আশ্রমে দান করল৷
অতএব এই সম্পূর্ণ ঘটনা বেআইনিভাবে করা হয়েছে। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, সেই মামলা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রবিকৃষ্ণ কপূর এবং বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ওঠে।
বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের!
এদিন মামলাকারীর আইনজীবী হাইকোর্টে জানান, পাচার করা হাতিগুলিকে নির্মমভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে। খুবই অযত্নে রাখার ফলে হাতিগুলির চর্মরোগ এবং পায়ে ক্ষত রয়েছে। চিকিৎসা বা পর্যাপ্ত খাদ্য দেওয়া হচ্ছে না। এমন কি, ওই হাতিগুলিকে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানেও ব্যবহার করা হয়েছে বলে রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে। আর তাতেই এবার উল্লেখযোগ্য রায় প্রদান করেন দুই বিচারপতি।
এদিন আদালতের তরফে জানানো হয়েছে যে ভোলা, সুমন আর বাসন্তী এই তিন হাতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্পত্তি। তাই শীঘ্রই বিহারের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হল রাজ্যের বন দফতরের প্রধানকে।
আরও পড়ুন: অনুব্রত অডিও কাণ্ডে নয়া মোড়! বীরভূমের পুলিশ সুপারকে দিল্লিতে তলব মহিলা কমিশনের
এর পাশাপাশি এদিন রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি রবিকৃষ্ণ কপূর এবং বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ জানিয়েছে যে, হাতি পাচার রোধে গা-ছাড়া মনোভাব নিলে চলবে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। জীবজন্তুর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। তাই রাজ্যকে ভবিষ্যতে হাতি পাচার রুখতে সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।