প্রীতি পোদ্দার, মুর্শিদাবাদ: বছর শেষ হতে হাতে বাকি আর একটা মাস। এরপরই শুরু হতে চলেছে ২০২৬। আর নতুন বছর পড়তেই বিধানসভা নির্বাচনের জোর প্রস্তুতিও শুরু হবে, তাই এখন থেকেই সেই প্রস্তুতির জন্য শাসকদল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তার আগে আজ থেকে রাজ্যে শুরু হবে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। যদিও এই প্রক্রিয়া নিয়ে কম বিতর্ক হচ্ছে না রাজ্যে, এমনকি আমজনতার হাজার আশঙ্কা, উদ্বেগের মৃত্যুর মতো বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে। এমতাবস্থায় এক অবাক কাণ্ড ঘটল মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। SIR এর জন্য ৩৫ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ব্যক্তি এবার ঘরে ফিরল।
বাড়ি ফিরলেন ৩৫ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তি
রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আজ থেকেই বাড়ি বাড়ি যাবেন নির্বাচন কমিশনের বুথ লেভেল আধিকারিকরা, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কিনা তা চেক করা হবে। এদিকে এসআইআর আতঙ্কে যেখানে কয়েকজন মারা যাচ্ছে সেখানে SIR আবার ফিরিয়ে দিল পরিবারের নিখোঁজ সদস্যকে! জানা গিয়েছে ৩৫ বছর পর ভগবানগোলায় নিজের বাড়ি ফিরলেন ‘নিখোঁজ’ করিম শেখ। এদিকে তাঁর এই প্রত্যাবর্তনে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যেমন বাড়ির সদস্য ফিরে আসার আনন্দ ভেসে উঠেছে, ঠিক তেমনই বেড়েছে একাধিক জটিলতা।
স্বামীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে বানানো হয়েছে নথি
জানা গিয়েছে, বছর ৩৫ আগে হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েছিলেন ভগবানগোলা থানার হাবাসপুর খাসমহল এলাকার বাসিন্দা করিম শেখ। বহু খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি ভগবানগোলা থানায় নিখোঁজের খোঁজ পেতে আবেদনও করা হয়। তাতেও কোনো সমাধান মেলেনি। ফলে বাড়়ির লোকেরা ধরেই নিয়েছিলেন, করিম শেখ আর ফিরবেন না। স্ত্রী মশিয়া বিবিও স্বামীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে দরকারি নথি তৈরি করে নিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যায় জানা যায় মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার সেই করিম এখনও মরেননি। তিনি জীবিত রয়েছেন এখনও। SIR-এর সময় যাতে ঝটপট নিজের নথি দেখাতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই ভগবানগোলা থানা এলাকার হাবাসপুর খাসমহল গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বইমেলা শুরুর দিনক্ষণ ঘোষণা, কতদিন চলবে? সুযোগ পাবে বাংলাদেশ?
কী বলছে করিমের ভাই কুদ্দুস শেখ?
করিম শেখের ভাই কুদ্দুস শেখ বলেছেন, “নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে বৌদির সঙ্গে ঝামেলা করে দাদা নিখোঁজ হন। হন্যে হয়ে খোঁজ করেও তাঁর হদিশ করতে পারিনি। আমরা মনে করেছিলাম করেছিলাম দাদা আর জীবিত নেই। কিন্তু হঠাৎ দাদা বাড়িতে এসে উপস্থিত হওয়ায় সবাই অবাক হয়ে যাই। দাদাকে দেখে চোখে জল এসে গিয়েছিল।” অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব করিম শেখ বলেন, এত দিন তিনি হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বাউরিয়া এলাকায় ছিলেন। সেখানে নতুন সংসার পেতেছেন। সুখেই কাটছিল তাঁর জীবন। কিন্তু রাজ্যে এসআইআর হওয়ায় প্রয়োজনীয় নথি জোগাড় করতেই গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসতে হল।’’