প্রীতি পোদ্দার, বর্ধমান: শিক্ষকদের পর এবার শিক্ষাকর্মীদের ‘অযোগ্য’ তালিকা (SSC Tainted List) প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন। জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ সোমবার অযোগ্যদের নাম ও রোল নম্বর দিয়ে তালিকা প্রকাশ করল SSC। যাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে তারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নয়া নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। এদিকে তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ধুন্ধুমার কাণ্ড। নাম উঠে এল বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিধায়কের ভাইয়ের।
অযোগ্যদের তালিকায় উঠে এল তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নাম
গত ৩ এপ্রিল সুুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি চলে গিয়েছিল ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। ২০১৬ সালের পুরনো প্যানেল বাতিল করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। বেঁধে দিয়েছিল সময়। সেই সব নিয়ম মেনেই আপাতত মিটেছে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা প্রক্রিয়া। তবে এখনও পর্যন্ত নিয়োগ নিয়ে কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। এবার পালা শিক্ষাকর্মী নিয়োগের। সেই মর্মে গত ১০ অক্টোবর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এসএসসি। কিন্তু, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও অযোগ্য আবেদন করতে না পারেন, সেজন্য গ্রুপ ডি-র অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করল SSC।
হাটগোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে নিয়ে হট্টগোল
এসএসসির তালিকা অনুযায়ী শিক্ষাকর্মী পদে ‘অযোগ্য’ হিসাবে উঠে এসেছে ৩,৫১২ জনের নাম। এসএসসি তরফ থেকে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি-এর জন্য আলাদা আলাদা ‘অযোগ্য’ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গ্রুপ-সিতে ১১৬৩ জন ও গ্রুপ-ডিতে ২৩৪৯ ‘অযোগ্য’ রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। আর সেই তালিকা প্রকাশ হতেই সামনে উঠে এল তৃণমূল নেতা বা নেতা-ঘনিষ্ঠদের নাম। যার মধ্যে অন্যতম হলেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক। তাঁর ভাই শান্তনু মালিকের নাম লিস্টে বেরতেই খোঁচা দিতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এদিকে তিনি শুধু বিধায়কের ভাই নন, তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে আর সেটি হল তিনি হাটগোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। যার দরুন শোরগোল পরে গিয়েছে এলাকা জুড়ে।
আরও পড়ুন: হবে প্রচুর কর্মসংস্থান, ঝাড়গ্রামে শিল্পের জন্য দুই সংস্থাকে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নবান্নর
কী বলছেন বিধায়ক?
ভাইয়ের নাম অযোগ্যের তালিকায় উঠতেই একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়েছে বর্ধমান উত্তর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার ভাই সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল। আমার মাধ্যমে চাকরি হয়নি। বিরোধীরা এটা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে। কোর্টের মাধ্যমে চাকরি গিয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে চাইনা।” অন্যদিকে ভাই শান্তনু মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে তৃণমূলের চাকরি চুরির অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে যে, “বিধায়ক প্রভাব খাটিয়ে ঘুরপথে ভাইকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। আবার বিধায়কের প্রভাবেই নাকি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়েছেন শান্তনু।”