বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নিজেকে বার্কের বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। সেই ভুয়ো পরিচয় নিয়েই দেশের সুরক্ষা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য পাচার করেছেন বিদেশে। তবে অবশেষে খেল খতম হল সেই ভয়ঙ্কর ব্যক্তির! গত সপ্তাহে মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন অভিযুক্ত আখতার হুসেইন (Mumbai Fake Scientist)। জানা যাচ্ছে, ভারতের পরমাণু সংক্রান্ত তথ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাচার করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন অভিযুক্ত আখতার।
একাধিক ভুয়ো নামে চলত তথ্য পাচারের কাজ
NDTV র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আখতার হুসেইনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে 10টিরও বেশি ম্যাপ, পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য, ভুয়ো লাইসেন্স, পাসপোর্ট, আধার সহ ভুয়ো প্যান কার্ড এবং BARC ID বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গায় নানা নামে নিজের অপরাধ কর্ম ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা আখতার। জানা গিয়েছে, কোথাও, আলেকজান্ডার পলমের, কোথাও আবার আলি রাজা হুসেইনি নামে নিজের পরিচয় দিতেন এই অভিযুক্ত। এদিকে একাধিক সূত্র মারফত খবর পেয়ে অভিযুক্তের ভাই আদিল হুসাইনিকেও আটক করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে দাদাকে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে।
1995 সাল থেকে দুষ্টচক্রের সাথে যুক্ত আখতার
রিপোর্ট অনুযায়ী, মুম্বই পুলিশের অ্যান্টি ক্রাইম ব্রাঞ্চ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, 1995 সাল থেকে বিভিন্ন বিদেশি ফান্ড পাচ্ছেন হুসাইনি ভাইরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পরমাণু সংক্রান্ত একাধিক তথ্য প্রচারের বিনিময়ে 2000 সাল পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন আখতার এবং তাঁর সহযোগী ভাইরা। তবে পরবর্তীতে সেই ফান্ডের পরিমাণ বাড়তে থাকে। পুলিশের অনুমান, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আখতার এবং তার ভাইদের মোট ফান্ডের পরিমাণ কোটি কোটি টাকা।
একাধিক রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জানা গেল, মূলত BARC এর বেশকিছু ব্লু প্রিন্ট এবং জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন একাধিক পরমাণু সংক্রান্ত তথ্য বিদেশে পাচার করে দেওয়ার বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি অর্থ ঘরে তুলেছিলেন আখতার। জানা যায়, পারমাণবিক চুল্লির নকশাও পাচার করতেন এই অভিযুক্ত।
অবশ্যই পড়ুন: ২১ বছর বয়সী শেফালি বর্মার মোট সম্পত্তির পরিমাণ জানলে আশ্চর্য হবেন
40 বারের বেশি বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন আখতার
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, 60 বছর বয়সী অভিযুক্ত আখতার হুসেন নিজের দুষ্টচক্রের জাল বিস্তার করতে অন্তত 40 বারেরও বেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমন করেছেন। সূত্রের দাবি যদি সত্যি হয় সেক্ষেত্রে, এই ভারত বিদ্বেষী ইরানে 20 বার বা তার বেশি সময় ভ্রমণ করেছেন। এছাড়াও রাশিয়া, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, ইরাক, আমেরিকা সহ বিশ্বের বহু দেশে যাতায়াত ছিল আখতারের। তদন্তকারীদের এও অনুমান, ভারতের পরমাণু সংক্রান্ত তথ্য বিদেশে পাচারকারী আখতার কমপক্ষে দুবার পাকিস্তানেও গিয়েছিলেন। এছাড়া পশ্চিমের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ISI এর সাথেও সম্পর্ক রয়েছে তাঁর।