প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: অবশেষে দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে কাটল ধাম বিতর্কের কলঙ্ক! বড় সিদ্ধান্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে ‘ধাম’ আখ্যা দেওয়া এবং ‘প্রসাদ’ বিতরণ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিল নতুন মোড়। গত জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি পেলেও মঙ্গলবার সেই মামলা নিজে থেকেই প্রত্যাহার করে নিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (Vishwa Hindu Parishad)। কিন্তু এখনও প্রকাশ্যে এল না এর সঠিক কারণ।
ধাম বিতর্কে জর্জরিত দিঘার জগন্নাথ মন্দির
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে ধাম কথাটি কীভাবে যুক্ত হতে পারে তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের দাবি ছিল, ভারতের চারটি ধাম রয়েছে। সেগুলি হল উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ, গুজরাতের দ্বারকা ধাম, পুরী ও তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম। এই চারটিই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র ধাম। নতুন করে ‘দিঘা ধাম’ ঘোষণা করা ধর্মীয় আবেগে আঘাতের সমান। তাই হঠাৎ করে কোনও মন্দির বানিয়ে তাকে ধাম বলা যায় না। তাদের আরও অভিযোগ ছিল, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যে ‘প্রসাদ’ বিতরণ করা হচ্ছে, তা ‘হালাল প্রসাদ’। তাই প্রসাদ বিতরণের পদ্ধতিতেও পরিবর্তনের দাবি তুলেছিল তারা। বেশ কয়েকদিন ধরেই এই মামলা চলছিল। এবার সেই মামলা শেষ হল।
মামলা প্রত্যাহার করল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দিঘার জগন্নাথ ধাম নিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের করা জনস্বার্থ মামলা শেষ পর্যন্ত খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে এর আগে একাধিকবার মামলাকারীর অনুরোধে শুনানি পিছোনো হয়েছে। বারবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নথি দাখিল করার। কিন্তু সে’সব কিছু করা হয়নি। তাই আর সম্ভব নয়। এবং আদালতের যুক্তি এখন মামলা খারিজ করা। তবে মামলাকারী চাইলে সম্পূর্ণ নথি দিয়ে নতুন করে মামলা দাখিল করতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত। শেষে নিজে থেকেই মামলা প্রত্যাহার করে নিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। কিন্তু মামলা প্রত্যাহারের কারণ নিয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট হয়নি।
আরও পড়ুন: “হবে না SIR…!” মাথাভাঙ্গায় গ্রামবাসীদের বাধার মুখে BLO-রা, ছাড়তে হল এলাকা
উল্লেখ্য, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের পর থেকেই রাজনৈতিক বিতর্ক থামেনি। মন্দির তৈরির বৈধতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছিল ঠিক তেমনই এই নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু মামলার কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণ কলকাতা হাইকোর্ট সেই সমস্ত মামলাই খারিজ করে দিয়েছে। তবে মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে যে নতুন মামলা দায়ের হয়েছে, তা এখনও বিচারাধীন রয়েছে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। এবার সেই মামলা কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।