১০ হাজার কোটির বিনিয়োগে হাওড়ায় শিল্প বিপ্লব, মিলবে ৫২ হাজার চাকরি

Howrah

প্রীতি পোদ্দার, হাওড়া: রাজ্যে শিল্পের ভবিষ্যৎ আরও সুনিশ্চিত করতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে বিগত কয়েক বছরে বড় বড় শিল্পপতিদের বিনিয়োগ বাড়ছে। এমতাবস্থায় সোমবার হাওড়ার (Howrah) সিনার্জি থেকে জেলার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে উদ্যোক্তাদের জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। দেওয়া হয়েছে একাধিক ক্ষেত্রে ছাড়পত্র। শুধু তাই নয় জেলাজুড়ে ক্লাস্টারগুলি পেতে চলেছে অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ। তাই আশা করা যাচ্ছে যে আগামী দুই থেকে তিনবছরে হাওড়া জেলায় শিল্পে ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হবে। আর তাতে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৫২ হাজার।

হাওড়ায় শিল্পের কর্মসূচি নিয়ে মহা উদ্যোগ

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সোমবার, হাওড়ার শরৎসদনে এমএসএমই দপ্তরের আয়োজিত একাদশতম সিনার্জিতে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। যেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাবেরী দাস ও সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য। ছিলেন রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ও তিন বিধায়ক। প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এমএসএমই ও বস্ত্রদপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব রাজেশ পান্ডে, এমএসএমই ডিরেক্টরেটের অধিকর্তা ইউ স্বরূপ, হাওড়ার জেলাশাসক পি দিপাপপ্রিয়া সহ অন্যান্যরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৫০ জন উদ্যোগী এদিন অংশগ্রহণ করেন সিনার্জিতে।

ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার

বরাবরই বাংলায় শিল্পের জেলা হিসেবে পরিচিত হাওড়া। সেখানে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন লক্ষ্য করা যায় চারিদিকে। তাই সেই শিল্পের ভবিষ্যৎ পুনরুজ্জীবন করা নিয়ে রাজ্য সরকার এক নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সোমবার সিনার্জি থেকে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের শিল্প সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা দূর করার জন্য ২০টি হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছিল। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে কীভাবে সাহায্য পাবেন এদিন এই স্টলগুলি থেকে সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ব্যবসার জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের যেমন ভূমি, বিদ্যুৎ, অগ্নিনির্বাপণ দপ্তরের ছাড়পত্র তুলে দেওয়া হয়। আর এই মহা অনুষ্ঠানের মাঝে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে উদ্যোক্তাদের জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণের ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার।

বৃদ্ধি পেয়েছে কর্মসংস্থান

রিপোর্ট মোতাবেক গত সোমবার, হাওড়ার শরৎসদনে এমএসএমই দপ্তরের আয়োজিত একাদশতম সিনার্জিতে ২০ জন উদ্যোগপতির হাতে এদিন সরাসরি ভূমি, দূষণ, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিবদ্ধ ছাড়পত্র ও ব্যাংক লোনের অনুমোদনপত্র তুলে দেওয়া হয়। অন্যদিকে হাওড়া জেলায় রাবার পার্ক, ফুড প্রসেসিং পার্ক, ফাউন্ড্রি পার্ক, জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক, জরি হাব মিলিয়ে ৪০টিরও বেশি ক্লাস্টার রয়েছে। এর ফলে গত কয়েক বছরে বালিটিকুরি, অঙ্কুরহাটি, সাঁকরাইল, জগৎবল্লভপুর, উলুবেড়িয়ায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আরও সেই কর্মসংস্থান আরও বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত নিয়ে BSF-পুলিশ সংঘর্ষ! আহত ৩, নদিয়ায় হুলস্থূল কাণ্ড

গত সোমবার ক্লাস্টারগুলিতে নতুন উদ্যোগপতিরা ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা নিয়ে সিনার্জির দ্বিতীয় পর্বে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব শিল্প সংগঠন ও চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেইসঙ্গে হলের বাইরে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা স্টল দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্টল দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে এমএসএমই দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব রাজেশ পান্ডে বলেন, ‘সাঁকরাইলের জরি হাবকে ৪৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে দু’টি অত্যাধুনিক মেশিন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে জগৎবল্লভপুরের ইমিটেশন জুয়েলারি ক্লাস্টারের উন্নয়নে ২৬ লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নতুন করে কয়েক হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

Leave a Comment