বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সিঙ্গাপুরের কাছে হারের পর এশিয়ান কাপের মূল পর্ব ছোঁয়াটা ভারতীয় দলের কাছে কার্যত চাঁদ ধরার মতোই। কাজেই আগামী 27 নভেম্বর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে বাছাই পর্বের ম্যাচে ভারত নামবে তা এক কথায় নিয়মরক্ষার। এবার সেই আসরের কথা ভেবেই 23 সদস্যের সম্ভাব্য দল ঘোষণা করে দিলেন প্রধান কোচ খালিদ জামিল। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, জামিলের এই দলে (জাতীয় দলে) তরুণদের সংমিশ্রণে ইস্টবেঙ্গল প্লেয়াররা জায়গা পেলেও স্থানরক্ষা হল না মোহনবাগানের কোনও ফুটবলারের (Mohun Bagan Footballers Dropped)। কিন্তু কেন?
কোন কারণে বাদ পড়লেন মোহনবাগানের জাতীয় দলের প্লেয়াররা?
এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের যা অবস্থা, তাতে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করাটা কোনও চমৎকার ছাড়া সম্ভব হবে না। এরই মাঝে 23 সদস্যের দল ঘোষণা কি শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার তাগিদেই? এই প্রশ্নের সাথে সাথে প্রশ্নের সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের প্রথম একাদশ চয়ন নিয়েও। ভক্তদের একাংশের জিজ্ঞাস্য সুনীল-সন্দেশ-গুরপ্রীতদের সিনিয়র দল নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিয়ম রক্ষার ম্যাচ খেলাবেন খালিদ জামিল নাকি ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তরুণ মুখেদের সুযোগ দেবেন তিনি? উত্তরটা আপাতত অধরা। তবে এমন প্রশ্নের মাঝে একেবারে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে খালিদের জাতীয় দল (স্কোয়াড)থেকে মোহনবাগান তারকাদের বাদ পড়া।
বুধবার খালিদ জামিলের তরফে ঘোষিত বাংলাদেশের বিপক্ষে 23 সদস্যের সম্ভাব্য খেলোয়াড়দের তালিকায় জায়গা পাননি মোহনবাগানের আপুইয়া থেকে শুরু করে মনবীর সিং এমনকি শুভাশিস বসু কেউই। কিন্তু কেন জায়গা পেলেন না তাঁরা? বেশ কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ফিফা আন্তর্জাতিক উইন্ডোর বাইরে ফুটবলারদের রিলিজ করা নিয়ে বিরোধের কারণেই খালিদ জামিলের সম্ভাব্য স্কোয়াডে জায়গা হল না মোহনবাগান ফুটবলারদের।
প্রায় সকলেই জানেন, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন অফিসিয়াল উইন্ডোর আগে জাতীয় দলের সমস্ত প্লেয়ারকে ক্যাম্পে রিপোর্টের জন্য ডেকেছিল। তবে মোহনবাগান তাঁদের জাতীয় দলের প্লেয়ারদের ছাড়তে রাজি হয়নি। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনও ফুটবলার আন্তর্জাতিক উইন্ডোড় সময় আঘাত পান সেক্ষেত্রে তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বেতন এবং যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দেয় FIFA। তবে যদি ওই একই খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক উইন্ডোর বাইরে বা পরে আঘাত পান সেক্ষেত্রে সেই দায় FIFA নেয় না।
এদিকে মোহনবাগানের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ‘আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে জাতীয় দলের কোনও ফুটবলার আহত হলে তাঁর ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয় না সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। তাই আমরাও খেলোয়াড়দের নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আর্থিক ঝুঁকি নিতে রাজি হইনি। তবে যদি কোনও প্লেয়ার স্বইচ্ছায় জাতীয় শিবিরে যেতে রাজি হয় সেক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা নেই।’এমতাবস্থায়, মোহনবাগান তাদের ফুটবলারদের প্রথমদিকে ছাড়তে রাজি না হওয়ায় খালিদ জামিলের জাতীয় সম্ভাব্য স্কোয়াড থেকে বাদ পড়লেন বাগানের সকলেই।

খালিদের দলে নেই সুনীল ছেত্রীও
ভারতীয় ফুটবল দলের সম্ভাব্য স্কোয়াড ঘোষণার আগে সুনীল ছেত্রীকে নিয়ে চলছিল একাধিক আলোচনা। আর এ সাবের মাঝেই ভারতীয় তারকা সুনীলকে বাদ দিয়েই সম্ভাব্য দল ঘোষণা করে দিলেন খালিদ। তাতে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন ভারতীয় ফুটবল সমর্থকরা। তবে শোনা যাচ্ছে, ভারতের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী নিজেই মনে করেন, অবসর ভেঙে ফিরে এলেও বর্তমানে তিনি আর ভারতের ভবিষ্যৎ নন। তাই গুরুত্বহীন ম্যাচে দলে জায়গা আটকে রাখার কোনও মানে হয়না। যেকোনও সময় তিনি পাকাপাকিভাবে অবসর ঘোষণা করে দিতে পারেন।
অবশ্যই পড়ুন: ফিরলেন পন্থ, ব্রাত্য শামি! সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দল ঘোষণা BCCI-র
এক নজরে ভারতের সম্ভাব্য দল
গুরপ্রীত সিং সান্ধু, হৃতিক তিওয়ারি, সাহিল, আকাশ মিশ্র, আনোয়ার আলি, বিকাশ ইউমনাম, হামিংথানমাউইয়া রালটে, মুহাম্মদ উভাইস, প্রমবীর, রাহুল ভেকে, সন্দেশ ঝিংগান, আশিক কুরুনিয়ন, ব্রিসন ফার্নান্দেস, লালরেমটলুয়াঙ্গা ফানাই, ম্যাকার্টন লুই নিকসন, মহেশ সিং নওরেম, নিখিল প্রভু, লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে, সুরেশ সিং ওয়াংজাম, ইরফান ইয়াদওয়াদ, মহম্মদ সানান, রহিম আলি এবং বিক্রম প্রতাপ সিং।