প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কয়েক মাস আগে আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশান কলোনিতে বোমাবর্ষণ এবং গুলি চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যার রেশ বেশ কয়েকদিন ধরেই ছিল। তবে এবার ওই এলাকায় তৈরি হল আরেক আতঙ্ক, আর সেটি হল SIR আতঙ্ক। কয়েকদিন ধরে অভিযোগ উঠে আসছে যে এসআইআর চালু হতেই নিউটাউন ও গুলশান কলোনী ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। অনেকের কাছে যথাযোগ্য নথি না থাকায় রাতারাতি জায়গা ছেড়ে পালিয়েছে। এমতাবস্থায় গুলশান কলোনীতে (Gulshan Colony) এনুমারেশন ফর্ম দিতে গিয়ে কার্যত গোলক ধাঁধার মুখে পড়ল সেখানকার বিএলও।
এনুউমারেশন ফর্ম বিলির কাজ করতে অবাক BLO
রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গুলশান কলোনীতে বসতির সংখ্যা ২ লাখ। কিন্তু অবাক করা বিষয় হল সেই এলাকায় ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ হাজার। অর্থাৎ কলোনির ৯০ শতাংশ মানুষ এই এলাকার ভোটার নন। আর তাতেই বেশ মুশকিলে পড়লেন বিএলও ওয়াসিম আক্রম। এদিন পার্ট ৩০৪ এ SIR নিয়ে তদারকি করার সময় বিএলও – র সঙ্গে ছিল শাসক দলের BLA ২। কিন্তু পঞ্চম দিনে গুলশান কলোনিতে এনুউমারেশন ফর্ম বিলির কাজ করতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান তিনি। এই বুথে যেখানে মোট বাড়ি কম বেশি প্রায় দু’হাজার হাজার এবং প্রতি ফ্লোরে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ টি করে ফ্ল্যাট। অথচ সেখানেসম্মিলিত ভাবে বুথের ভোটার সংখ্যা মাত্র ১৬০০ কিছু বেশি।
কী বলছেন BLO
আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশান কলোনিতে SIR আবহে এইরূপ চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে বিএলও ওয়াসিম আক্রম। তিনি বলেন, “এক তলা থেকে চার তলায় উঠলাম। শুধু একজনের নাম পেয়েছি। আর কেউ নেই। আর পুরো যা আছে কেউ বলছে বিহার, কেউ বলছে রিপন স্ট্রিটের বাসিন্দা। অন্য জায়গা থেকে এসে এখানে থাকছে অথচ ভোটার কার্ড নেই। খুব সমস্যারমধ্যে পড়তে হচ্ছে।” এই প্রসঙ্গে ওই তৃণমূল কংগ্রেসের বিএলএ ২ মহম্মদ মিনাজ বলেন, “এলাকার তৃণমূল নেতা তথা BLA দাবি করছেন,অনেকেই অন্য এলাকার ভোটার। কিন্তু তালিকায় তাঁরা ঠিকানা পরিবর্তন করেননি।
আরও পড়ুন: নথি চাইতেই মৃতদেহ ফেলে উধাও পরিবার! অবাক কাণ্ড আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে
উল্লেখ্য, SIR ঘোষণার পরেই কম বেশি বিভিন্ন এলাকায় সার্ভে করে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ মানুষ তাঁদের ভিটে বসতি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। বাদ যায়নি খাস নিউটাউনে। সেখানকার ‘সিটি সেন্টার ২’ শপিং মলের ঠিক পিছনে আটঘড়া পূর্ব পাড়ায় দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ মানুষ রাতারাতি চোরের মতন এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। অভিযোগ তাঁরা নাকি বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতে এসেছিলেন এমনকি ধরাও পড়েছিলেন। তবে কি একই অবস্থা হতে চলেছে গুলশান কলোনিতে।