সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ শান্তিনিকেতন…নামটা শুনলেই যেন মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই স্মৃতিবিজড়িত জায়গার মাহাত্ম্যই আলাদা। প্রাচীন কিছু গাছ, বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস, আমার কুটির, সোনাঝুরি জঙ্গল, সোনাঝুরি হাট (Shonajhuri Haat), সাঁওতাল গ্রাম, এখানকার টক মিষ্টি দই, সব মিলিয়ে এক আলাদাই ভালো লাগা কাজ করে এখানে এলে। তবে আজ আপনাদের বোলপুর-শান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ সোনাঝুরি হাট নিয়ে এমন এক তথ্য দেব যা আপনাদের মন খারাপ করে ছাড়বে। শোনা যাচ্ছে, এবার এই হাট অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে প্রশাসন। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন।
অন্যত্র সরছে সোনাঝুরি হাট?
সম্প্রতি বীরভূম জেলার বোলপুর শান্তিনিকেতনে বন বিভাগের জমি থেকে সোনাঝুরি হাট স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেছেন যে সোনাঝুরি হাটের জন্য বিকল্প স্থান খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। শান্তিনিকেতনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এই হাটটি বর্তমান রূপে থাকবে নাকি স্থানান্তরিত হবে তা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং শিল্পীরা উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুনঃ স্থায়ী ঠিকানায় কীভাবে করবেন ফ্ল্যাটের জন্য আবেদন? জানুন ফর্ম পাওয়ার ঠিকানা ও শর্ত
বন বিভাগের জমিতে অবস্থিত বাজারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকার বিকল্পগুলি বিবেচনা করছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন যে হাটটি বন্ধ করার পরিবর্তে, সরকার এর সাংস্কৃতিক চরিত্র এবং পরিচয় সংরক্ষণের জন্য এটিকে উপযুক্ত স্থানে স্থানান্তর করতে চায়। উপযুক্ত বিকল্প জমি চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রী আরও যোগ করেছেন যে বীরভূমের আহমেদপুরে বন্ধ চিনিকলের জায়গায় একটি নতুন শিল্প পার্ক তৈরির পরিকল্পনা চলছে, যা প্রায় দুই দশক ধরে বন্ধ রয়েছে। সম্মেলনে আরও জানানো হয়েছে যে স্থানীয় কারিগর এবং শিল্পীদের জন্য একটি স্থায়ী প্ল্যাটফর্ম প্রদানের জন্য ইলামবাজার এবং লাভপুরে ছোট বাজার তৈরি করা হচ্ছে। আসলে সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের দূষণ নিয়ে রাজ্যের বন দফতর ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ভর্ৎসনা করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। এরপর থেকেই সরকারের তরফে এই হাট অন্যত্র সরানোর প্ল্যান চলছে বলে খবর।
ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা
বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে রাজ্য ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প বিভাগ আয়োজিত সিনার্জি ও ট্রেড সম্মেলনে এই পরিকল্পনাগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রী অনুব্রত মণ্ডল, চন্দ্রনাথ সিনহা সহ বিভাগীয় সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা কারিগর ও শিল্পীদের উপকারে আসবে। যদিও একদম সোনাঝুরির বুকে থাকা এই হাট অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভাবনায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। এখন এটাই দেখার যে হাটটি আগের জায়গাতেই থাকে নাকি অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে সেদিকে।