প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা মাস। তাই সেই নির্বাচনকে টার্গেট করে এখন থেকেই প্রচার প্রস্তুতি নিতে ফেলেছে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু তার আগে রাজ্যে SIR নিয়ে শুরু হয়েছে এক নয়া বিতর্ক। তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি লেগেই রয়েছে। এমতাবস্থায় রাজ্যের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও কেন্দ্রীয় তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগে ফের তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
কেন্দ্রীয় তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ শুভেন্দুর
রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ সোমবার উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে তাঁর। জানা গিয়েছে এদিন বন্যায় মৃতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর, অন্যদিকে আজই সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই বৈঠকে তিনি বলেন, “অবৈধ ভাবে টাকা এক দফতর থেকে অন্য দফতরে ‘হস্তান্তর’ হচ্ছে। কেন্দ্রের পাঠানো SDRF-র টাকা রাজ্যের PNRD-র দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার। বিপর্যয় মোকাবিলার টাকা অন্য খাতে সরাতে দেব না। অনেক রাজ্য প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্য হাতে অর্থ সরানো অপরাধ। তৃণমূল সরকার রাজ্যকে কার্যত দেউলিয়া করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। প্রয়োজনে রাজ্যপালকে জানাবো, জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হবে।”
হস্তান্তরিত ১৩৪৭ কোটি টাকা!
সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দাবি করেন, “চলতি অর্থবর্ষে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য SDRF-এ কেন্দ্রীয় সরকার ৯৮৩ কোটি টাকা দিয়েছে। আর গত পাঁচ বছরে কেন্দ্র মোট ৪৪৭০ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু এই টাকা ‘নয়ছয়’ করছে রাজ্য। এই হস্তান্তরিত ১৩৪৭ কোটি টাকা বন্যাকবলিত দুর্গতদের জন্য। ওখানে একজন ‘ভাইপো ম্যান’ রয়েছেন। মনোজ পন্থ নিজে সই করেছেন। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। ভোটের আগে এই টাকা দিয়ে বাংলার বাড়ি কর্মসূচিতে বিতরণ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কেন তা হবে? নরেন্দ্র মোদী ৩০ হাজার কোটি টাকা বাড়ি তৈরির জন্য দিয়েছিল, আপনি তো সবটাই খেয়ে ফেলেছেন।” ক্যাগ অডিটের দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তিনি বলেন, “ এই ঘটনায় একটা শীঘ্রই ক্যাগ অডিট করানো হোক। পাশাপাশি, উনি আজ যখন দুর্গতদের জন্য ক্ষতিপূরণ বিলি করবেন, তখন যেন উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামকে বিপর্যস্ত হিসাবে ঘোষণা করেন। তা না হলে তো গাইডলাইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে সমলৈঙ্গিক বিয়ে, ভার্চুয়ালি রিয়া-রাখিকে অন্তরের শুভেচ্ছা প্রদান অভিষেকের
উল্লেখ্য, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতার উদ্দেশে শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন যে, “আপনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি সবার। আপনি ভাইপোর পিসি হতে পেরেছেন। আপনি মৌলবাদীদের নেত্রী হতে পেরেছেন। আপনি যেদিন এখানে মিটিং করে বলেন, ছোট বোন নন্দীগ্রাম, বড় বোন ভবানীপুর সেখানে প্রথম দফায় ৫ লক্ষ টাকা করে, হাইকোর্টের অর্ডারে, তাঁদেরকে চার লাখ টাকা করে আপনার সরকার দিয়েছিল। কিন্তু চারজন ওই কর্মসূচিতে যায়নি, আমার সঙ্গে বিজেপিতে গিয়েছিল বলে। আপনি তাঁদেরকে টাকা দেননি। তিন বছর ধরে আমার রোজগারের অর্থ থেকে, বিশ হাজার ত্রিশ হাজার করে করে, এই চার জনকে ষোলো লক্ষ টাকা আমি দিয়েছি। অর্থটা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত নয়, তৃণমূলের ফান্ডেরও নয়।’