সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আগামী কেন্দ্রীয় বাজেটে দেখা যেতে পারে বড় চমক। জানা যাচ্ছে, তামাক ও পান মশলার উপর এবার নতুন কেন্দ্রীয় সেস বা ন্যাশনাল ক্যালামিটি কন্টিনজেন্ট ডিউটি (NCCD) আরোপ (GST on Tobacco) করা হবে। এমনকি সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সরকারের মূল উদ্দেশ্য এই পণ্যগুলোর উপর মোট পরোক্ষ করের বোঝা যাতে না কমে, সেই ভারসাম্য বজায় রাখা। আদৌ কি তাই? জানতে হলে চোখ রাখুন প্রতিবেদনটির উপর।
কেন নতুন কর আরোপের সম্ভাবনা?
মানি কন্ট্রোলের রিপোর্ট অনুযায়ী, জিএসটি ২.০ কাঠামোতে বিলাসবহুল পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে তামাক ও পান মশলার মতো পণ্যের উপর করের বোঝা কিছুটা কমত। তাই রাজস্বের ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্র আলাদা একটি কর আরোপের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মূলত সরকারের উদ্দেশ্য একটাই, এই ধরনের উচ্চ রাজস্বের পণ্যগুলির উপর মোট করের হার যাতে না কমানো যায়, সেই ব্যবস্থা করা। যদি জিএসটি ৪০% থাকে, তাহলে বাকি অংশের ভারসাম্য রাখা হবে কেন্দ্রের নতুন করার কাঠামোর মাধ্যমেই।
এমনকি নতুন এই কর জিএসটি কাঠামোর বাইরে থাকবে বলেই জানানো হয়েছে। ফলে এটি কার্যকর করতে কোনওরকম জিএসটি কাউন্সিলের অনুমোদনের দরকার পড়বে না। বরং এই কর সরাসরি সংসদে উপস্থাপন করা হবে আর্থিক বিলের সংশোধনী হিসেবেই। অর্থাৎ, সংসদে এই বিল পাস হলেই তা কার্যকর হবে।
বর্তমান করের অবস্থা
বলে দিই, বর্তমানে তামাকজাত পণ্যের উপর মোট করের বোঝা ৫৩%। ওদিকে পান মশলার উপর কর ৮৮%। এর মধ্যে মধ্যে জিএসটি নেওয়া হয় ২৮% এবং বাকিটা বিভিন্ন হারে কম্পেনসেশন সেস মারফৎ আরোপ করা হয়। কিন্তু জিএসটি ২.০ চালু হওয়ার পর এবং পুরনো ঋণ পরিশোধ শেষ হলে এই কর নেমে আসবে ৪০%-এ। সে কারণেই রাজস্বের ঘাটতি মেটাতে এবার সরকার বিকল্প রাস্তা খুঁজছে।
এদিকে এই প্রস্তাবের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জিএসটি কম্পেনসেশন সেস ব্যবস্থার অবসান। কারণ, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার পর রাজ্যগুলির রাজস্ব মেটাতেই এই সেস চালু করা হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালের পর কেন্দ্র প্রায় ২.৭ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ শোধের জন্য এই সেস চালু রেখেছিল। আর এখন সেই ঋণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই সেস ব্যবস্থাও ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়ার পথে। তবে হ্যাঁ, তামাক ও পান মশলার মতো পণ্যের উপর সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তা বজায় রাখতেই এই নতুন কেন্দ্রীয় সেস বা NCCD আরোপের প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুনঃ দিল্লির লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নয়া ক্লু! প্রকাশ্যে জঙ্গির পরিচয়
জানিয়ে রাখি, ন্যাশনাল ক্যালামেটিক কন্টিনজেন্ট ডিউটি বা NCCD হল ২০০১ সালের ফাইন্যান্স অ্যাক্টের আওতায় প্রবর্তিত একটি কেন্দ্রীয় কর। আর এর মূল উদ্দেশ্য হল দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য তহবিল সংগ্রহ করে রাখা। এমনকি এই কর নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের উপরেই আরোপ করা হয়। যার মধ্যে তামাক অন্যতম। আর সে কারণেই এবার বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, আগামী বাজেটে চড়া হারেই কর আরোপ করা হবে তামাক ও পান মশলার উপর।