SIR বিতর্কের ঝড় উঠল নবদ্বীপে! অন্তত ৬০ ভোটারের বাবা এক, কী বলছে কমিশন?

Nabadwip

প্রীতি পোদ্দার, নবদ্বীপ: গত ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে SIR বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন। তাই এইমুহুর্তে রাজ্যে একাধিক নানা ঘটনা, হরেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সাধারণত ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় হয় নিজের নাম, না হলে মা-বাবা বা পরিজনের নাম খুঁজছেন সকলেই। তাই নিয়ে বেশ কয়েক জায়গায় আবার রাজনৈতিক গণ্ডগোলও বাঁধছে। এমতাবস্থায় নবদ্বীপে (Nabadwip) ঘটল এক অবাক কাণ্ড। ২০০২ এর তালিকায় একসঙ্গে ৬০-৭০ জনের অভিভাবকের নাম হিসেবে দেখা গেল একজনের নাম।

নবদ্বীপে SIR বিতর্ক

রিপোর্ট অনুযায়ী মায়াপুর ইসকনের একাধিক ভক্ত ৭৭ নম্বর নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের ১০ নম্বর অংশে ঠাকুর ভক্তিবিনোদ নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। এঁদের প্রায় সকলেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, কিন্তু তাঁদের সম্পর্কের তালিকা দেখলে চোখ কপালে উঠবে। কারণ দেখা যাচ্ছে তালিকায় কমপক্ষে পরপর ৬০-৭০ ভক্তের ‘পিতার নাম’-এর জায়গায় লেখা জয়পতাকা স্বামী দাস। তাই সেক্ষেত্রে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের ক্ষেত্রে নাম বাদ যাবে কিনা এ নিয়ে বেশ সংশয়ের মধ্যে রয়েছে ইসকনের ভক্তরা। কিন্তু তবুও প্রকাশ্যে কেউই এ ব্যাপারে কোনো কথা বলছে না।

কী বলছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক?

২০০২ সালের নবদ্বীপের SIR-এর তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় এইমুহূর্তে বেশ ভাইরাল। এই প্রসঙ্গে ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। আমি না জেনে মন্তব্য করব না। BLO বা BLA খতিয়ে দেখে বিষয়টি বলতে পারবেন।’ তবে নবদ্বীপর এক ব্লক কর্তা এই ঘটনাকে স্বাভাবিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সন্ন্যাস গ্রহণের পর যেহেতু অনেক ভক্ত সংসার ত্যাগ করেছেন, তাই অনেকেই গুরু মহারাজকে অভিভাবক হিসেবে বেছে নেন। তাই ভোটার কার্ড গুরু পিতার নাম দিয়েই তৈরি হয়। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী জানান, ‘যে কোনও সম্পর্ক লেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে শুনানি হবে। কোনও সমস্যা নেই।’

আরও পড়ুন: দুর্নীতি নয়, ডেটা প্রসেসিং ত্রুটি! প্রাথমিক শিক্ষক মামলায় হাই কোর্টে জানাল রাজ্য সরকার

নদিয়ার রাজনৈতিক মহলে যখন SIR এর তালিকা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তখন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য রমা বিশ্বাস বলেন, ‘আমরাই প্রথম সর্বদলীয় বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। ভারতবর্ষের সংবিধান অনুসারে সচিত্র পরিচয়পত্রে বাবার নাম থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। গুরুদেবের কাছ থেকে কেউ দীক্ষা নিতেই পারেন। কিন্তু বাবার পরিচয় পাল্টায় না। আমরা মনে করি সেটাই হওয়া উচিত।’ এবার দেখার পালা নবদ্বীপের এই SIR বিতর্ক শুনানির ক্ষেত্রে কোন দিকে মোড় নেয়।

Leave a Comment