অফিস পরিষ্কার করেই ৮০০ কোটি আয়! চন্দ্রযান-৩ এর বাজেটকেও হার মানাল কেন্দ্র

Earning from Scrap Selling

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সরকারি দপ্তরের ফাইলের স্তূপ, ভাঙ্গা চেয়ার-টেবিল আর ধুলয় জমে থাকা আলমারি বছরের পর বছর ধরে শুধুমাত্র জায়গা দখল করে রেখেছিল অফিসের ঘরগুলোর কোনায়। তবে আপনি কি জানেন, এই পুরনো জিনিসপত্র এখন সরকারের জন্য সোনার খনি হয়ে দাঁড়িয়েছে? হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন।

সম্প্রতি কেন্দ্র সরকারের প্রশাসনিক সংস্থার তরফ থেকে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেখানে জানানো হয়েছে, অফিসের বাতিল ফাইল এবং স্ক্র্যাপ বিক্রি (Earning from Scrap Selling) করে এক মাসে ৮০০ কোটি টাকা আয় করেছে কেন্দ্র সরকার। আর অঙ্কটা এতটাই বিশাল যে, সেটা ইতিহাসের ঐতিহাসিক চন্দ্রযান-৩ মিশনের বাজেটকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে, যার বাজেট ছিল ৬১৫ কোটি টাকা।

অফিস পরিস্কার করেই বিরাট সাফল্য

২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে শুরু হয়েছিল দপ্তরগুলি সাফাই অভিযান। তার উদ্দেশ্য একটাই, অপ্রয়োজনীয় ফাইল, আসবাবপত্র বা ইলেকট্রনিক বর্জ্যগুলিকে আলাদা করা। এদিকে এবছর অক্টোবর মাসে সেই অভিযানের নতুন ধাপ চালানো হয়। আর মাত্র ৩০ দিনের মধ্যেই অফিস পরিস্কার করতে গিয়ে ২৩২ লক্ষ বর্গফুট জায়গা খালি করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি ৩৯ লক্ষ পুরনো ফাইল বিক্রি হয়েছে স্ক্র্যাপ হিসেবে।

সরকারের একটি হিসাব বলছে, ২০২১ থেকে শুরু করে এই উদ্যোগে মোট ৪০৯৭.২৮ কোটি টাকা আয় হয়েছে। অর্থাৎ, অফিস পরিষ্কার করতেই রাজকোষে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঢুকেছে সরকারের। আর এই গোটা উদ্যোগের নেতৃত্ব ছিলেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যথাঃ মনসুখ মাণ্ডবীয়ব্য, কে রামমোহন নাইডু ও জিতেন্দ্র সিংহ। তাদের তত্ত্বাবধানেই অফিস পরিষ্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

কী কী বিক্রি করা হয়েছে?

তবে যদি আমরা বিক্রির তালিকা দেখি, তাহলে সেই তালিকায় রয়েছে পুরনো ও অপ্রয়োজনীয় ফাইল, ভাঙা চেয়ার-টেবিল, মরচে ধরা আলমারি, সোকেজ, পুরনো ইলেকট্রনিক্সের সরঞ্জাম ইত্যাদি। এমনকি এই সমস্ত জিনিস বিক্রি করে দপ্তরগুলি একদিকে যেমন রাজস্ব আয় করছে, অন্যদিকে অনেকটাই জায়গা খালি হচ্ছে। ফলে অফিসের কর্মক্ষমতা আরও বাড়ছে।

বলাবাহুল্য, চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পে ইসরো মোট খরচ করেছিল ৬১৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে অফিস পরিস্কার করেই কেন্দ্রীয় সরকারের এক বছরে আয় হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ১২৫ কোটি টাকার হেরফের। আর এই তুলনা থেকেই স্পষ্ট প্রমাণ মিলছে যে, সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রশাসনিক দক্ষতা যদি ঠিক থাকে, তাহলে অপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকেও মোটা অংকের টাকা আয় করা যায়।

আরও পড়ুনঃ মিলবে না কোনও গ্যারান্টি! ডিজিটাল সোনায় বিনিয়োগ নিয়ে সতর্কবার্তা SEBI-র

চিনের উপর নির্ভরতা কমাবে ভারত

উল্লেখ্য, বিশ্বের বিরল খনিজের সবথেকে বড় উৎপাদক হল চিন। আর ভারত সেই নির্ভরতা কমিয়ে এখন নিজস্ব উৎস থেকেই এই উপকরণ সংগ্রহ করতে চাইছে। ন্যাশনাল ক্রিটিকাল মিনারেল মিশনের আওতায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে খুব শীঘ্রই। আর দেশের বিভিন্ন শিল্প সংস্থাগুলি ইতিমধ্যে সরকারের সঙ্গে অংশগ্রহণ করব বলে প্রস্তাব দিয়েছে।

Leave a Comment