একাধিক পুরুষের সাথে সম্পর্ক! মাসুদ আজাহারের বোনের সহযোগী! কে এই শাহিন শাহিদ?

Doctor Shaheen Shahid Linked with Pakistani womens wing related to park terrorist group

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: খোদ দিল্লির বুকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে মহিলা চিকিৎসক শাহিন শাহিদের (Doctor Shaheen Shahid)। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের বাসিন্দা শাহিনের সাথে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের বড় যোগ খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, পাক জঙ্গি সংগঠনের মহিলা শাখার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের এই চিকিৎসক।

কে এই শাহিন শাহিদ?

দিল্লি পুলিশের তরফে পাওয়া একাধিক তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বুকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় যে সন্দেহভাজন চিকিৎসক শাহিনের নাম উঠে এসেছে তিনি আসলে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজাহারের বোন সাদিয়ার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী। জানা গিয়েছে, মাসুদের বোন সাদিয়া পাকিস্তানের জামাত উল মোমিনাত নামক একটি মহিলা সংগঠন চালান। রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরের এই মহিলা সংগঠনের প্রধান ভারতীয় মুখ ছিলেন শাহিন।

পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাসুদের বোন সাদিয়ার সংগঠনে নিয়োগের কাজ শুরু হয়েছিল গত অক্টোবর মাস থেকেই। জানা গিয়েছে, জইশ সংগঠনের সদস্যদের পরিবারের মহিলাদের এই সংগঠনে নিয়োগ করা হচ্ছিল। সেখানেই ভারতীয় মুখ হিসেবে কাজ করতেন উত্তর প্রদেশের চিকিৎসক শাহিন। বেশ কিছু রিপোর্ট ঘেঁটে জানা গেল, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের লালবাগের বাসিন্দা তিনি। 1979 সালে লখনউতে জন্ম তারপর যোগীরাজ্যেই বেড়ে ওঠা এই শাহিনের। স্থানীয় সূত্রে খবর, ছোটবেলা থেকেই প্রচন্ড মেধাবী ছিলেন এই মহিলা চিকিৎসক।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন বলছে, লখনউয়ের সরকারি বালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। জানিয়ে রাখি, পাক জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত শাহিন নিজের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছিলেন। পরবর্তীকালে প্রয়াগরাজের এটি সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে MBBS এবং MD ডিগ্রি অর্জন করার পর গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থী মেমোরিয়াল কলেজে 2006 সালে ফার্মাকোলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তীতে 2009 তে ছয় মাসের জন্য কনৌজ মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়ে তাঁকে। সেখানে ছয় মাস কাজ করার পর 2010 ফের কানপুরে ফিরে আসেন তিনি।

বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, 2013 সালে হঠাৎ কোনও রকম সরকারি ছুটি কিংবা আগাম নোটিশ ছাড়াই কাজ করা বন্ধ করে দেন শাহিন। এরপর 2021 সালে গিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। শোনা যায়, শাহিনের প্রথম স্বামী ছিলেন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁর সাথে অবশ্য ঘর করতে পারেনি তিনি। 2015 সালে এসে প্রথম স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয় সন্দেহভাজন শাহিনের। পরে তিনি বেশ কয়েকজন পুরুষের সাথেও সম্পর্কে জড়ান বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এছাড়াও শাহিনের বিরুদ্ধে একাধিক বিবাহের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের লালবাগের এক রেস্তোরাতেও মাঝে কাজ করতেন এই শাহিন। যদিও পরে আল-ফালহা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেখান থেকেই ওই পাক জঙ্গি সংগঠনের সহযোগী মহিলা অর্গানাইজেশনের জন্য কাজ করতেন তিনি।

অবশ্যই পড়ুন: দলে থাকতে হলে… রোহিত, বিরাটকে বার্তা BCCI-র! উত্তর দিলেন শর্মাও

উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো ফরিদাবাদে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পরই গ্রেফতার করা হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা সন্দেহভাজন চিকিৎসক মুজাম্মিল গণাইকে। জানা গিয়েছে, এই ব্যক্তি বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে মুসাইব নামে পরিচয় দিতেন। তিনিও আল-ফালহা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদের পরই উঠে আসে মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়ার সংগঠনের হয়ে কাজ করা তথ্য পাচারকারী শাহিনের নাম!

Leave a Comment