হাইকোর্টে প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা নিয়ে নয়া আপডেট

Calcutta High Court

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০২৩ সালে প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে সেটি কমে দাঁড়ায় ৩২ হাজারে৷ বিচারপতি স্পষ্ট নির্দেশ দেন যে তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্যকে। সেখানে যোগ্য এবং উত্তীর্ণদের চাকরি বহাল থাকবে। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গেলেও সেখানেও নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্ষদকে শুরু করতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। শেষে এই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে এবং পরে ফের হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। তখন থেকে চলছে শুনানি। শেষমেশ গতকাল মিটল সেই শুনানি পর্ব।

সওয়াল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের

গতকাল অর্থাৎ বুধবার, কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতির মামলার শুনানি ওঠে। সেই মামলায় মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম মানা হয়নি। অন্যদিকে বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষাদপ্তরের পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, “২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন হয়, সেই সময় প্রশিক্ষণহীনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অনুমতি ছিল। বলা হয়েছিল নিয়োগ হওয়ার পর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে। চাকরি পাওয়ার পর তাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিয়েছেন।”

পাল্টা প্রশ্ন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের

বুধবার, হাইকোর্টে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মামলাকারীদের পক্ষে বলেন, “এটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানিকে ওএমআর শিট তৈরি করা, মূল্যায়ন করা, চূড়ান্ত প্যানেল তৈরি করা-সহ একাধিক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, নিয়োগের জন্য সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল কোন রুলে? রাজ্যের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা, তার কোনও নথি কমিশন দেখাতে পারেনি।” পাল্টা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় CBI-এর তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “CBI একজন প্রার্থীকেও দেখাতে পেরেছে, যিনি টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন? সিবিআই গত পাঁচ বছর ধরে তদন্ত শেষ করতে পারল না ?”

আরও পড়ুন: অভিষেকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা! রায় সংরক্ষিত রাখল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট

প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতি মামালার ক্ষেত্রে প্রথম থেকে রাজ্য সরকার এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য, দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম হয়েছে। পরে তা সংশোধনও করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই দাবি মানতে চায় না মামলাকারী। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই মামলার ক্ষেত্রে হাই কোর্ট কী রায় দেয়, তা নিয়ে কৌতূহল দানা বেঁধেছে আইনজীবী মহলে। কিন্তু এদিন হাইকোর্টে শুনানি পর্ব শেষ হলেও কবে রায় ঘোষণা হবে, সে বিষয়ে আদালতের তরফে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি। হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, “সবে শুনানি শেষ হয়েছে। প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার রায় ঘোষণা হতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে। ”

Leave a Comment