প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: SIR এর আবহে ভয়ংকর কাণ্ড কাকদ্বীপে (Kakdwip)! আইনজীবীর চেম্বার থেকে উদ্ধার হল ল- কলেজে পাঠরত ২১ বছর ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থানা এলাকায়। ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা ওই ছাত্রীর বাড়ি কাকদ্বীপের গান্ধীনগর এলাকায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান পরিবারের সদস্যরা। খবর দেওয়া হয়েছিল কাকদ্বীপ থানার পুলিশকেও। ইতিমধ্যেই ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থানার প্রতাপাদিত্য গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটে যায় এক ভয়ংকর কাণ্ড। আইনজীবী শেখ মানোয়ার আলম নামে এক আইনজীবীর চেম্বার থেকে উদ্ধার হয়েছে এক আইনের ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ! মৃত পড়ুয়া হিন্দু ল’ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়াশোনার পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিংয়ের জন্য প্রতিদিনই নাকি তিনি যেতেন ওই স্থানীয় আইনজীবীর চেম্বারে। আর সেই আইনজীবীর সঙ্গেই এবার নাকি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তাঁর।
প্রেমঘটিত কারণেই আত্মহত্যা?
মৃতার পরিবারের দাবি, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার সকালেও বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। তবে সন্ধ্যায় খবর আসে ওই আইনজীবীর চেম্বারে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে তাঁর দেহ। পরিবারের লোকেরাই খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে একটি ব্যাগ এবং তার ভেতর একটি চিঠি, যেটি প্রাথমিকভাবে প্রেমপত্র বলেই মনে করা হচ্ছে। পরিবারের দাবি, সেই চিঠিতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই তরুণীর সঙ্গে আইনজীবীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের ইঙ্গিত। তাঁদের অভিযোগ, সেই সম্পর্কেই নাকি দেখা দেয় টানাপড়েন, আর সেই কারণেই মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
পলাতক অভিযুক্ত আইনজীবী
আইনি ছাত্রীর এই মৃত্যু ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কাকদ্বীপ থানার পুলিশও ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু ওই ছাত্রীর আত্মহত্যার পরে অভিযুক্ত আইনজীবী পলাতক। সেই কারণে কাকদ্বীপ-সহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদিকে এই ঘটনার জেরে প্রশাসন এবং পুলিশি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন: সাত মাস আগেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর, ফের বিয়ে করছেন জন বার্লা! পাত্রী কে?
বিস্ফোরক অভিযোগ সুকান্তর
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে অভিযুক্ত আইনজীবীর বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেন। এবং ক্যাপশনে তিনি জানান, “কাকদ্বীপের আইনী ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ মানোয়ার আলম নাকি তৃণমূল নেতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। তাঁর দাবি, পুলিশ ক্রমাগতই শাসকদলের ক্ষমতাবানদের রক্ষা করে চলেছে। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। ধিক্কার জানাই পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলকে।” জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই ফোনের সিম এখনও পুলিশ পায়নি।
According to media reports, the body of a first-year Hindu law student was found hanging today inside the chamber of a lawyer named Sheikh Monowar Alam, located in the Pratapaditya Gram Panchayat area under Kakdwip Police Station in South 24 Parganas.
Reports further state that… pic.twitter.com/697RSgE8aB
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) November 13, 2025