সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্র সরকার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালাচ্ছে। আর ঠিক তেমনই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকার চালু করেছিল ই-শ্রম কার্ড (e-Shram Card)। যদি আপনার এই কার্ড থাকে, তাহলে প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পেনশন পেতে পারেন। তবে কীভাবে বানাবেন আর কী কী সুবিধা মিলবে তা জানতে প্রতিবেদনটি পড়ুন।
কী এই ই-শ্রম কার্ড?
আসলে শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রকের তরফ থেকে জারি করা হয় এই ই-শ্রম কার্ড। এটি মূলত অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা শ্রমিকদের আর্থিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে শ্রমিক, কৃষক, চালক, গৃহকর্মী, রাস্তার বিক্রেতা বা দৈনিক মজুরি ভিত্তিক উপার্জনকারী ব্যক্তিরা এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পেয়ে থাকে। আর প্রতিটি নিবন্ধিত কর্মীকে একটি ১২ সংখ্যার ইউএএন নম্বর দেওয়া হয়। যার ফলে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা, বীমা বা পেনশন প্রকল্পের অ্যাক্সেস পাওয়া যায়।
মাসিক ৩০০০ টাকা পেনশন
এদিকে কেন্দ্র সরকার ই-শ্রম কার্ডকে প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মানধন যোজনার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছে। এই কার্ড যাদের থাকবে, সেই সমস্ত শ্রমিকের ৬০ বছর বয়সের পর মাসিক ৩০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হবে। মূলত সরকার ও কর্মী উভয়ই কর্মজীবনের বছরগুলিতে স্বল্প পরিমাণে মাসিক অবদান রাখলে বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
কারা পাবে সুবিধা?
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে অবশ্যই কিছু যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। সেগুলি হল—
- বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে।
- অসংগঠিত খাতে কর্মরত হতে হবে।
- ইপিএফও কিংবা ইএসআইসি-র আওতায় থাকা যাবে না।
- আধার নম্বরের সঙ্গে অবশ্যই মোবাইল নম্বর লিঙ্ক থাকতে হবে।
- প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
রয়েছে আরও বেশ কিছু সুবিধা
তবে হ্যাঁ, এই ই-শ্রম কার্ড থাকলে শুধুমাত্র পেনশন নয়, বরং আরও সুবিধা পাওয়া যায়। সেগুলি হল—
- প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী মানধন যোজনার আওতায় মাসিক ৩০০০ টাকা পেনশন মেলে অবসরের পর।
- দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনার আওতায় ২ লক্ষ টাকা দুর্ঘটনা বীমা কভার মেলে।
- তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা মেলে।
- চতুর্থত, অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য ভবিষ্যৎ কল্যাণ প্রকল্পের সুবিধা মেলে।
অনলাইনে কীভাবে আবেদন করবেন?
অনলাইনে ই-শ্রম কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করুন—
- প্রথমে ই-শ্রমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (eshram.gov.in) ভিজিট করুন।
- এবার হোমপেজে ‘ই-শ্রম নিবন্ধন করুন’ অপশনটিতে ক্লিক করুন।
- এরপর আপনার আধার নম্বর এবং ক্যাপচা কোড বসিয়ে ওটিপি-তে ক্লিক করুন।
- এরপর ওটিপি দিয়ে পরিচয় যাচাই করুন।
- এরপর আপনার ব্যক্তিগত এবং ব্যাঙ্কের বিবরণ পূরণ করুন।
- এরপর সফলভাবে আবেদন জমা দেওয়ার পরে ই-শ্রম কার্ড ডাউনলোড করুন আর ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করে রাখুন।
আরও পড়ুনঃ রবিবার ফের বন্ধ বিদ্যাসাগর সেতু! কত ঘণ্টার জন্য? জারি বিজ্ঞপ্তি
কী কী ডকুমেন্ট লাগে?
ই-শ্রম কার্ডে আবেদন করার জন্য অবশ্যই আবেদনকারীর আধার কার্ড, আধারের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নম্বর, ব্যাঙ্কের পাসবুক বা অ্যাকাউন্টের বিবরণ এবং পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি দরকার পড়ে।