রিলায়েন্সের বিরুদ্ধে ২৩,৩২৩ কোটি টাকার গ্যাস চুরির অভিযোগ কেন্দ্রের! বিপাকে আম্বানি

Reliance Industries

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শেষমেষ গ্যাস চুরি! তাও রিলায়েন্সের মতো ইন্ডাস্ট্রির (Reliance Industries) বিরুদ্ধে! হ্যাঁ, এবার এমনই অভিযোগে ২৩,৩২৩ কোটি টাকা দাবি করে বসল কেন্দ্র সরকার। আর এতেই বিপাকে পড়ল মুকেশ আম্বানি। জানা গেল, প্রতিবেশী সংস্থার গ্যাস বেআইনিভাবেই তুলে নিয়েছিল রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কৃষ্ণ-গোদাবরী বেসিন থেকে সরকারি সংস্থা ওএনজিসি-র গ্যাস চুরির অভিযোগ আনা হয় রিলায়েন্স ও তাদের অংশীদারদের বিরুদ্ধে, যার আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ২.৮১ বিলিয়ন ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় দাঁড়াচ্ছে ২৩,৩২৩ কোটি টাকা।

গ্যাস চুরির অভিযোগ রিলায়েন্সের বিরুদ্ধে

আসলে ২০১৬ সালে প্রথমবার এই বিতর্ক সামনে আসে। সে সময় অভিযোগ ওঠে যে রিলায়েন্স তাদের নিজস্ব কূপ থেকেই পার্শ্ববর্তী সংস্থার গ্যাস বেআইনিভাবে তুলে নিচ্ছে। এমনকি সেগুলি বিক্রি করছে। তার প্রাথমিক মূল্য ছিল মোটামুটি ১.৫৫ বিলিয়ন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১২,৮৬৫ কোটি টাকা। সেই সময় কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এই দাবি করেছিল। যদিও রিলায়েন্স সেই দাবিকে অগ্রহণযোগ্য বলেই দাবি করে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতেও প্রস্তুত বলে জানিয়ে দেয় তারা।

তবে এরপর ২০১৮ সালে রিলায়েন্স একটি আন্তর্জাতিক আর্বিটেশন মামলায় জয়ী হলে দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায়কে খারিজ করে দেয় এবং সরকারের পক্ষেই রায় দেয়। এরপর আবারও রিলায়েন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যার দরুন ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ দাবি করে কেন্দ্র সরকার। তবে রিলায়েন্স গোষ্ঠী তাদের অবস্থানে অনড়। তারা স্পষ্ট বলেছে যে, এই গ্যাস কোনওভাবে চুরি করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণ স্থানান্তরিত গ্যাস ছিল। অর্থাৎ, ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক নিয়ম মেনেই তা উত্তোলন করা হয়েছিল।

জি নিউজের এক রিপোর্ট দাবি করছে যে, আবেদনকারীরা আদালতের কাছে মামলার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত নথিও চেয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে চুক্তিও। কিন্তু তদন্তে বলা হচ্ছে, চুরি হওয়া গ্যাসের মূল্য ১.৫৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং সুদ দাঁড়িয়েছে ১৭৪.৯ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই বিতর্কে স্বাধীন পরামর্শদাতা সংস্থা এবং এ পি শাহের নেতৃত্বাধীন একটি এক প্যানেলের রিপোর্টগুলিও সরকারের দাবির পক্ষে গিয়ে সায় দেয়। আর সবমিলিয়ে এই বিরাট অংকের ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে এখনও সুপ্রিম কোর্টে চলছে আইনি লড়াই।

আরও পড়ুনঃ বিহারে NDA-র জয়ের আনন্দ করায় গ্রেফতার বিজেপি নেতা! উত্তপ্ত দিনহাটা

২০১৩ সালেও উঠেছিল সন্দেহ

তবে এবার নতুন নয়, ওএনজিসি ২০১৩ সালেও গ্যাস চুরির সন্দেহ করেছিল। এমনকি সেবারও সরকারকে রিপোর্ট করেছিল। তবে রিলায়েন্স যুক্তি দেয় যে গ্যাসটি পরিযায়ী প্রকৃতির, অর্থাৎ প্রাকৃতিক ভাবে ওই অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে প্রভাবিত হয়। উত্তোলন করার নিয়মে কোনওরকম ভুল ছিল না। তবে এখন দেখার, এই আইনি লড়াই ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।

Leave a Comment