সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সদ্য সামনে এসেছে বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Assembly Election 2025) ফলাফল। আর সেখানেই খেল দেখিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে মহাগঠবন্ধনের প্রধান শক্তি হিসেবে তেজস্বী যাদবের আরজেডি মাত্র ২৫টি আসনে জয় পেয়েছে, যা প্রত্যাশার ধারেপাশেও ঘেঁষেনি বললেই চলে। কিন্তু জানা যাচ্ছে, বিজেপির থেকে ১৫ লক্ষ বেশি ভোট পেয়েও গো হারা হেরেছে তেজস্বীর আরজেডি! কেন এরকম ফলাফল?
পরিসংখ্যান বলছে, এবার মোট ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে আরজেডি। সংখ্যার হিসেবে তা দাড়াচ্ছে মোটামুটি ১ কোটি ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৫টি। অন্যদিকে বিজেপির ঝুলিতে রয়েছে ১ কোটি ৮১ হাজার ৪৩টি ভোট। অর্থাৎ, তেজস্বী যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল পার্টির থেকে ১৫ লক্ষ কম। কিন্তু তা সত্ত্বেও আসন সংখ্যায় আরজেডি ধারেপাশে নেই নীতিশের বিজেপির কাছে।
কেন বেশি ভোট পেয়েও পিছিয়ে পড়ল আরজেডি?
আসলে রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মূল কারণ হল ভোট শেয়ার বনাম সিট কনভার্সন। আরজেডি অনেক কেন্দ্রে বিপুল পরিমাণে ভোট পেয়েও বিজয়ী সীমা ছুঁতে পারেনি। ফলত, মোট ভোট বাড়লেও আসন সংখ্যা বাড়াতে পারেনি তেজস্বীর দল। আবার অন্যদিকে বিজেপি এখানে খেল দেখিয়েছে। কারণ, বিজেপি ভোট কম পেলেও আসন সংখ্যা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে।
আরজেডি এবার মোট ১৪৩টি আসনে লড়েছে। আর সেখানে বিজেপি ও জেডিইউ মাত্র ১০১টি করে আসনে লড়েছিল। ফলতই, আরজেডির কাছে ৪২টি বেশি আসনে ভোট গ্রহণের সুযোগও ছিল, যা সরাসরি তাদের মোট ভোটের পরিমাণকে বাড়িছে ঠিকই, কিন্তু তাদের আসন সংখ্যা বাড়াতে পারেনি। কিন্তু তেজস্বী যাদবের দলই বিহারে সবথেকে বেশি ভোট পেয়েছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও গত ভোটের তুলনায় আরজেডির ভোট কমে গিয়েছে মাত্র ০.১২ শতাংশ। ২০২০ সালে বিধানসভা ভোটে আরজেডি পেয়েছিল ২৩.১১ শতাংশ ভোট, আর এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ২২.৯৯ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ ডাম্পারের ভারে ভেঙে পড়ল লোহার সেতু! হুলুস্থুল কাণ্ড তুফানগঞ্জে
কী কারণে আরজেডির এই দশা?
তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন দল আরজেডির এই পতনের মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পয়েন্ট তুলে ধরছে। প্রথমত, রাহুল গান্ধীর ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে এখানে। বিহারে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করার মৌলিক দায়িত্ব ছিল স্থানীয় নেতাদের। কিন্তু তা সম্ভবপর হয়নি। দ্বিতীয়ত, কংগ্রেস তাদের দলগুলির বেশি সংখ্যক আসনে লড়ার জন্য দরকষাকষি করেছিল। এছাড়া মহাজোটের নেতাদের মধ্যে সারা বছর ধরে যৌথ কর্মসূচি ও সমষ্টিগত চেষ্টার অভাব ছিল। যার ফলে ভোটের পরিমাণ বাড়লেও আসন সংখ্যা অনেকটাই কমেছে।