প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে তুমুল ব্যস্ততা দেখা গিয়েছে বঙ্গে। এমতাবস্থায় ফের খবরের শিরোনামে উঠে এল সোনারপুরে শুল্ক অফিসারকে কেন্দ্র করে FIR এর অভিযোগ! শুল্ক অফিসারকে মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছিল চারজন। কিন্তু তাঁদের পরে জামিন হয়ে যায়, এদিকে এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) পাল্টা মামলা করে ওই আধিকারিক। সিট গঠনেরও আর্জি জানান তিনি। এবার সেই মামলায় বড় রায় দিলেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
উল্লেখ্য, গত মাসে নিজের আবাসনে এক কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিককে মারধর করার ঘটনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক অন্দরে। গাড়িতে ধাক্কা লাগা নিয়ে সোনারপুরের ওই শুল্ক আধিকারিকের সঙ্গে অটোচালকদের প্রথমে বচসা হয়। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ঝামেলা প্রাথমিকভাবে মিটে যাওয়ায় আবাসনে চলে গিয়েছিলেন আধিকারিক। কিন্তু পরে প্রতিশোধ নিতে কিছুক্ষণ পর ৫০-৬০ জন দুষ্কৃতী শুল্ক আধিকারিকের আবাসনের বাইরে জড়ো হয়। দরজা ভেঙে আবাসনের ভিতরে ঢুকে ওই শুল্ক আধিকারিককে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর স্ত্রীকেও হেনস্তা করা হয় বলেই অভিযোগ। এরপর পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ার হলে ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু পরে জানা যায়, তাঁদের জামিন হয়ে গিয়েছে। আর তাতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ।
রিপোর্ট পেশের নির্দেশ রাজ্যকে
নিগৃহীত কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিক পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের জামিনের কারণ জানতে চাওয়ায় পাল্টা শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে কেস করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এফআইআরও দায়ের হয়। এরপর সেই অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই আধিকারিক। সিট গঠনেরও আর্জি জানান তিনি। এই মামলা প্রথমবার শুনানিতে উঠলে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ, শুল্ক অফিসারকে মারধরের ঘটনায় অসন্তুষ্ট হন। সেইসময় রাজ্য জানায়, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তখনই বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের মন্তব্য, যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের হয়ত সাত বছরের নীচে সাজা হবে। কিন্তু প্রাথমিক তদন্ত কি হয়েছে? এরপর বিচারপতি এই মামলার তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ছিল সেই মামলার দ্বিতীয় শুনানি।
আরও পড়ুন: ইডেনে আজব জুতো পরেই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ইতিহাস লিখলেন ঋষভ পন্থ
FIR খারিজ করলেন বিচারপতি
রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওঠা মামলার শুনানি হয় বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের বেঞ্চে। সেই সময় সরকারি আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “শুল্ক আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে FIR কেন দায়ের করে দিলেন? সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী প্রাথমিক অনুসন্ধান করেছিলেন?” শুধু তাই নয়, ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী শুল্ক আধিকারিককে নোটিস পাঠানো হয়েছিল কিনা, সে প্রশ্নও করেন বিচারপতি। তবে একটি প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। শেষে এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় শুল্ক আধিকারিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া FIR খারিজের নির্দেশ দেন বিচারপতি।