বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: জল্পনাই সত্যি হল। জুলাই গণহত্যা মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (Sheikh Hasina Verdict)। তবে তিনি শুধু একা নন, হাসিনার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন মহা পরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনেরও অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদেরও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
হাসিনার সাজা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ছেলে জয়
গত আগস্টেই ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তাফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সেই থেকে বর্তমানে ভারতেই রয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ ছাড়লেও জুলাই গণহত্যা মামলায় ওপার বাংলার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চলছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সেই মতোই, দীর্ঘ চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ অর্থাৎ সোমবার গণহত্যা মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। বেলা গড়াতেই সেই কাজ সম্পন্ন হল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
না বললেই নয়, মা শেখ হাসিনা যে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন তার একটা আভাস আগে থেকেই পেয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এ নিয়ে সোমবার রায় ঘোষণার আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকা জয় একেবারে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, “মাকে সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। তবে আপাতত তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নই আমরা।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ
সোমবার, বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন 3 সদস্যের ট্রাইবুন্যার 1 দোষী সাব্যস্ত করে শেখ হাসিনাকে। 2 বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরীর বেঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পরিকল্পিত এবং ব্যাপক পরিসরে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। তাই এই ঘটনায় দোষীদের ছেড়ে দেওয়া যায় না।
বলা বাহুল্য, ট্রাইব্যুনালে হওয়া মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পরপর পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করার নির্দেশ, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা, ঢাকার চানখারপুল এলাকায় আন্দোলনরত 6 জনকে গুলি করে হত্যা সহ আশুলিয়ায় 6 জনকে পুড়িয়ে মারার মতো বিষয়গুলি। শেখ হাসিনার মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার রায় সরাসরি সম্প্রসারিত হয়েছে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে। সেই সাথে সেই মামলার রায়দান পর্ব দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজেও।
অবশ্যই পড়ুন: অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ১১ টেস্টের ১০ টিতেই সফল, ক্রিকেট বিশ্বে বাভুমা ছাড়া পারেনি কেউ
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার পাশাপাশি জুলাই গণহত্যা মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ অপরাধী প্রমাণিত হলেও এদের মধ্যে শুধুমাত্র পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। অন্যদিকে আসাদুজ্জামান আপাতত পলাতক বলেই দাবি করছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম চ্যানেল 24।