গরম পড়তে না পড়তেই পানীয় জলের আকাল! এবার চোখ রাঙাচ্ছে কলকাতাও! তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। আবার এই গরমে সঙ্গী হয়েছে অসহনীয় তাপপ্রবাহ। আর নিতে পারছে না জনসাধারণ। দরদর করে ঘেমে যাচ্ছে মুহূর্তেই। তাই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকটাই বেশি জল খেতে হচ্ছে শহরবাসীকে। আর সঙ্গে চলছে দিনে ৩-৪ বার স্নান পর্ব। যার দরুন এমন নানান কারণে কলকাতাবাসীর জলের চাহিদা বেড়েই চলেছে। তাহলে কি এবার বেঙ্গালুরুর পর জলের আকাল দেখা যাবে কলকাতাতে?
নাভিশ্বাস গরমে তাপমাত্রা যতই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে ততই যেন মাথাপিছু জলের চাহিদা বাড়ছে। এদিকে প্রয়োজন বাড়লেও উৎপাদন বাড়েনি। বরং ক্রমশই কমছে জলের উৎপাদন। আর এই প্রকট চাঁদিফাটা গরমে গঙ্গার জলস্তরও নামছে হু হু করে। একমাত্র জোয়ারের সময় গঙ্গা থেকে জল টেনে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পরিশ্রুত করা হয়। কিন্তু জলের চাহিদা এত বাড়ার দরুন ভাটার সময় জল টানার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে সেই জলে শুধুই কাদা উঠছে। গত সোমবার এই প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম করজোরে প্রার্থনা করেছেন শহরবাসীর কাছে।
জল অপচয় প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম!
তাঁর অনুরোধ, ‘সমস্ত বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জলের অপচয় ঠেকান। ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলো শুধুমাত্র জোয়ারের সময় গঙ্গা থেকে জল নিতে পারছে। চাহিদা অনুযায়ী সমস্ত বাড়িতে জল তখনই পৌঁছে দেওয়া যাবে যখন সকলে সচেতন হবেন।’ এছাড়াও মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘গরমে সবাই কষ্টে আছে। এই মুহূর্তে জলের একান্ত প্রয়োজন। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সকলের ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার। এই সময়টা জল অপচয় করবেন না। অপচয় রুখে দিন।’
কলকাতা পুরসভার বিস্ফোরক রিপোর্ট
এদিকে কলকাতা পুরসভা থেকে উঠে এল এক ভয়াবহ রিপোর্ট। সেখানকার জল-বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘প্রতিটি ফোটায় .০৫ ml জল বেড়িয়ে যায় কল থেকে। প্রতি সেকেন্ডে যদি এক ফোঁটা করে জল কল থেকে বেড়িয়ে যায় অঙ্কের হিসেবে চার লিটারের ওপর জল নষ্ট হয়। এই চার লিটার জলও এই সময় অত্যন্ত প্রয়োজন। একশোটা বাড়িতে যদি এভাবে জল নষ্ট হয় তাহলেই চারশো লিটার জলের অপচয়!’
সম্প্রতি পানিহাটিতে জলসংকট দেখা দিয়েছে।এদিকে গরমে জল অপচয় ঠেকানোর পাশাপাশি পুর-কর্মীদের জন্যেও নতুন সার্কুলার জারি করেছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার রাস্তা সাফাই, জঞ্জাল পরিষ্কার বিভাগের কর্মীরা এই গরমেও নিজেদের কাজ বহাল রাখায় মেয়র জানিয়েছেন, আজ থেকে সকাল দশটার পর বিকেল চারটে পর্যন্ত আপাতত তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।