নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূলের সদ্য ‘অপসারিত’ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের! যার কারণে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি! স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলার রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট একদিনেই বাতিল করে দিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর চাকরি। যার জেরে নানা রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা লেগেই রয়েছে। একে অপরকে কালি মাখাতে কেউ পিছু হটছে না। নিজেদের হকের চাকরি টিকিয়ে রাখতে চারিদিকে চলছে তীব্র আন্দোলন। কিন্তু এর মাঝেই রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন কুণাল ঘোষ।
সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বিতাড়িত কুণাল
গতকাল অর্থাৎ বুধবার তৃণমূলের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করা হয়। যেখানে বলা হয় ‘কুণালের বক্তব্য তাঁর নিজস্ব বক্তব্য, দলের নয়। তাঁকে আগেই দলীয় মুখপাত্র -র পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এবার তাঁকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হল।’ এদিকে এইদিন সকালে কলকাতার একটি ক্লাবের তরফে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে যান কুণাল ঘোষ। পাশাপাশি সেই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। একই মঞ্চে তাপসকে পাশে বসিয়ে তাঁর সম্পর্কে নানা প্রশংসা করেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘তাপস রায় একজন দক্ষ জনপ্রতিনিধি। মানুষের জন্য মন খুলে কাজ করেন।’ উল্টোদিকে তাপস রায় ও কুণাল ঘোষের নানা প্রশংসা করে। যার দরুন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মনে প্রশ্ন জাগছে তাপস রায়ের প্রশংসা করেই কি কুণাল ঘোষকে উচিত শিক্ষা দিল দল?
SSC দুর্নীতি প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ
এদিকে এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষা নিয়োগ সংক্রান্ত এক আলোড়ন ফেলে দেওয়া মন্তব্য করে বসলেন কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর নাম করে যে টাকা তোলা হচ্ছে সেই খবর আগে থেকেই দলের কাছে ছিল। এমনকি চাকরি যে বিক্রি হয়েছে তা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল জানত। সেকারণেই ২০২১ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়নি। যা নিয়ে পার্থ ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন।’ এছাড়াও তিনি জানান ‘পার্থ একা নন, আরও একাধিক নেতা চাকরি বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। সেই লোক এখনও মন্ত্রিসভায় আছে। যিনি চাকরি বিক্রিতে যুক্ত তিনি এখনও রাজ্যের মন্ত্রী।’
আরও পড়ুনঃ পেনশন পান? মে মাসে বড় বদল আনল পশ্চিমবঙ্গ সরকার! বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল অর্থ দফতর
পাশাপাশি কুণাল ঘোষ SSC র সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এই বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের স্বদিচ্ছা থাকলে সমস্যা সমাধান করা যেত খুব সহজেই। কিন্তু সবাই নিজেকে বাঁচানোর দৌঁড়েছে। এই মন্তব্য রীতিমত তুমুল সমালোচনা উঠেছে বিরোধী দলগুলির মধ্যে। কুণাল ঘোষের বিজেপির প্রতি এ হেন রং পরিবর্তন এবং সুর পরিবর্তন কার্যত সকলকে ভাবাচ্ছে যে এবার কি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি তে যোগদান করতে চাইছেন কুণাল ঘোষ? তবে এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, দল ছাড়ার কোনও সম্ভাবনা তাঁর নেই। তিনি বলেন, ‘আমি তৃণমূলের সৈনিক। মমতা দিদি আমার নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা বলে মানি, ওকে ভালোবাসি। আমি দলের সৈনিক হিসাবে থেকে যাব। দল শেষ সুতোটা ছেড়ে দিলেও থেকে যাব।’