ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ সিগন্যাল লাল! এদিকে ট্রেনের চাকা গড়াচ্ছে শিয়ালদার দিকে! আমরা সকলেই জানি যে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচলের জন্য তিন রকমের সিগন্যাল থাকে। লাল, হলুদ এবং সবুজ। ঠিক তেমনই ট্রেন সফরের ক্ষেত্রেও এই সিগন্যাল গুলি সমান গুরত্বপূর্ণ। কোন সিগন্যালে ট্রেনের গতি কমবে এবং কোন সিগন্যালে ট্রেন অপেক্ষা করবে সবটাই ট্রেন চালককে নখদর্পণে রাখতে হয়। তবে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে মূল সিগন্যাল সবুজ না হওয়া সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্ম থেকে লোকাল ট্রেন ছাড়া হচ্ছে শিয়ালদায়। অর্থাৎ মূল সিগন্যাল লাল থাকা অবস্থায় ট্রেনের চাকা গড়াচ্ছে শিয়ালদার দিকে।
নিত্যযাত্রীদের একাংশ জানে, ‘গ্রিন’ বা সবুজ সিগন্যালের অর্থ হল সামনের রেলপথ ক্লিয়ার রয়েছে। নির্ধারিত সীমার মধ্যে ট্রেন এগিয়ে যেতে পারবে। কিংবা দুটো হলুদ সিগন্যালের কথায়। হলুদ রঙের অর্থ হল ‘অ্যাটেনশন’। তীব্র গতিতে ধাবমান ট্রেনের চালককে গতি কমানোর নির্দেশ দেয় ‘ডাবল ইয়েলো’ সিগন্যাল। এরপরই আসে ‘ওয়ান ইয়েলো’ ও ‘রেড’ সিগন্যাল বা লাল সঙ্কেত। একবার হলুদ সিগন্যাল হলে বুধতে হবে ‘কশন’। অর্থাৎ সতর্ক থাকুন৷ ট্রেনের গতি কমিয়ে গাড়ি থামানোর প্রস্তুতি নিন। শেষে আসে রেড বা লাল সিগন্যাল। যার অর্থ ‘স্টপ’।
সিগন্যাল ছাড়াই এগোচ্ছে লোকাল ট্রেন
কিন্তু শিয়ালদার নিতযাত্রীদের একাংশ দাবি করছে যে মূল সিগন্যাল লাল থাকা সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে লোকাল ট্রেনগুলি এগিয়ে যাচ্ছে শিয়ালদায়। এরপরে প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে কিছুটা এগিয়ে ফের সেই ট্রেনগুলি থমকে যাচ্ছে। আবার বেশ কয়েক মিনিট অপেক্ষা করার পর সিগন্যাল সবুজ হলে ফের ট্রেন যাত্রা শুরু করছে। তবে মূল সিগন্যাল লাল থাকা সত্ত্বেও কেন ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছাড়ছে, তা স্পষ্ট নয় যাত্রীদের কাছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘কলিং অন সিগন্যাল’ এর কারণেই ট্রেন ধীর গতিতে লাল সিগন্যাল থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে কলিং অন সিগন্যাল দেওয়া হলে চালক সেটি প্রথমে গার্ডকে জানায়। এরপর গার্ডের কাছে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিশেষ অনুমতি আসে। সেই অনুমতি ইন্টারকমের মাধ্যমে চালককে জানান গার্ড। তারপরই সেই বার্তা মেনে ট্রেন ধীরে ধীরে চালাতে শুরু করেন লোকো পাইলট।
কেন করা হয় এই ব্যবস্থা?
আসলে কোনও লোকাল ট্রেনটি কলিং অন সিগন্যালে প্ল্যাটফর্ম ছাড়ছে, তার আগেও একাধিক ট্রেন থাকে। অন্যদিকে লাইনে অন্য গাড়ি থাকলে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় সিগন্যাল লালই থাকবে। তাই বেশিরভাগ সময়েই শিয়ালদায় ১ থেকে ১০ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সিগন্যাল লাল থাকলেও সময়ে ট্রেন ছাড়তে কলিং অন সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছে। যার জেরে ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে ২-৩ মিনিটই দাঁড়িয়ে থাকে।
প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা?
পূর্বে শিয়ালদা শাখায় একাধিকবার দু’টি ট্রেন খুব কাছে চলে এসেছিল বা মৃদু সংঘর্ষ পর্যন্ত ঘটেছিল। যার জেরে নিতযাত্রীদের একাংশ মনে করছে যদি ট্রেন লাল সিগন্যাল ক্রস করে এগিয়ে যায় তাহলে আগের ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হতে পারে। এবং বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান এই ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই।