ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: শিক্ষকদের আচরণবিধি নিয়ে এবার মুখ খুলল কলকাতা হাই কোর্ট! শুধু ছাত্র, ছাত্রীদের পড়ানোই নয় শিক্ষকদের মেনে চলতে হবে আরও নানা নিয়ম। SSC নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক রায় দান করার পর এবার কলেজের অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের উদ্দেশে নয়া নির্দেশিকা জারি করল হাইকোর্ট।
শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ!
সম্প্রতি এক অধ্যাপিকার করা মামলায় কলেজের পরিবেশ নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হুগলি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দায়ের করা সেই মানহানির মামলা খারিজ করা হয়েছে। মামলায় আবেদনকারী সেই অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে কলকাতার সেই কলেজে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু তাঁর নিয়োগে খুশি ছিল না বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থিত ছাত্র সংসদ। তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে আবার ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কলেজ সম্পর্কে মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। কিন্তু হাইকোর্ট সেই মানহানির মামলা খারিজ করে দিয়েছে।
মামলা খারিজের কারণ
উল্লেখিত মামলা খারিজ করার কারণ হিসেবে আদালত জানিয়েছে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা জ্ঞান বা বিশ্বাস নিয়ে অভিযোগকারীর সুনাম ক্ষুণ্ণ হতে পারে এমন কোনও কাজের প্রমাণ নেই। সেই কারণেই মামলাটি খারিজ করা হয়েছে। পাশাপাশি কলেজের জন্য বিশেষ কিছু গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কোন ধরনের আচারণ অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের মেনে চলতে হবে, তাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি শম্পা দত্ত (পাল)। তিনি জানান কলেজের মূল উদ্দ্যেশ্য হল পড়াশোনা। কিন্তু বর্তমানে রাজনীতির জাল এতটাই কলেজের অন্দরমহলে ছড়িয়ে পড়েছে যে কলেজের মূল্য উদ্দেশ্যটাই চাপা পড়ে যাচ্ছে।
কোন কোন আচরণগুলো পালন করতে বলা হয়েছে অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের?
- পড়াশোনার ভাল পরিবেশ রাখতে হবে কলেজে, পড়ুয়াদের সঙ্গে সম্মানজনক ব্যবহার করতে হবে।
- পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সে ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে।
- স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। শুধুমাত্র ভাল পড়ালেই চলবে না। কলেজের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সব বিষয়েই স্বচ্ছতা রাখতে হবে।
- দক্ষতার সঙ্গে বিষয়গুলি পড়াতে হবে, শিক্ষা পদ্ধতির দিকেও নজর দিতে হবে।
- সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা আরও বাড়াতে হবে, যাতে পড়ানোর ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
- ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী ও কলেজের অন্যান্য কর্মীর সঙ্গে যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।
- পঠন-পাঠন, গবেষণা থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের সাপোর্ট করার ক্ষেত্রে পলিসি অমান্য করা যাবে না।
- সমস্ত শিক্ষা সংক্রান্ত এবং প্রশাসনিক লেনদেনে সৎ এবং স্বচ্ছ হতে হবে।