সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়ের (MLA Mukul Roy) বিধায়ক পদ খারিজ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই খারিজের নির্দেশ নিয়ে এবার পরিস্থিতি নতুন মোড় নেওয়ার পথে। আদালতে স্পষ্ট জানিয়েছিল, তিনি দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় বিধানসভার নিয়ম ভঙ্গ করছেন। তবে সেই রায়ের বিরুদ্ধেই এবার বিধানসভা সচিবালয় উচ্চতর আদালতে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা শুরু করছে। এমনকি সোমবার সন্ধ্যাবেলা বিধানসভায় অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সঙ্গে স্পিকারের বৈঠকও হয়েছে।
দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় বিধায়ক পদ খারিজ মুকুলের
বলে রাখি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপি থেকে জিতেছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে তিনি জুন মাসে তৃণমূলে যোগ দেন। এতেই তার বিধায়ক পদ খারিজ করার দাবি তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু আবেদন জানিয়েছিলেন যে, দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এমনকি তাতে কাজ না হওয়ায় মুকুলের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিলেন শুভেন্দু। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলা করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল যে, এই মামলার রায় হবে কলকাতা হাইকোর্টে। তারপরেই হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। সে সময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বেঞ্চেই এই মামলার শুনানি হয়। এর ফলস্বরূপ গত বৃহস্পতিবার আদালত দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ করেছে।
তবে হাইকোর্টের এই রায় সামনে আসতেই রাজ্য-রাজনীতিতে আরও হাওয়া গরম হয়ে ওঠে। এই প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছিলেন যে, আমরা কিছু একটা ভাবছি, কী করা যায়। তবে বিধানসভার সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল, স্পিকার ইতিমধ্যেই রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। আর গোটা বিষয়টি আইন মোতাবেক দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিধানসভার সচিবালয় হাইকোর্টের রায়ের উপর আপিল করার প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর। আর আপিল করলে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের রায় স্থগিত হতে পারে। এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ কোটি কোটি টাকা খরচ, কাজ হবে ৩৯৪ প্রকল্পের! ভোল বদলে যাবে ব্যারাকপুরের
উল্লেখ্য, মুকুল রায়ের পাশাপাশি ২০২১ সালে আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। যেমন সুমন কাজ্ঞিলাল, তন্ময় ঘোষ, হরকালী প্রতিহার ও তাপসী মণ্ডল। তাদের বিরুদ্ধেও দলত্যাগ বিরোধী আইনে পদ খারিজের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন স্পিকারের কাছে জমা পড়েছে। আর সেই আবেদনগুলি এখন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন সকালের নজর, স্পিকার ও বিধানসভার সচিবালয় পরবর্তী কোন পদক্ষেপের পথে হাঁটে সেদিকেই।