১৮ হাজার কোটির সম্পত্তি বিক্রি হয় ৭৪ টাকায়! এই ভারতীয় ব্যবসায়ীর গল্প চোখে জল আনবে

Published on:

br-shetty

ঋত্বিক পাত্রঃ সংগ্রামের গল্প অর্থাৎ লড়াই করে ওঠার গল্প সর্বদাই বাকিদের অনুপ্রেরণা জোগায়। ব্যবসার ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকটা তাই। ব্যবসা সফল করার জন্য এবং সেটিকে উচ্চতায় নিয়ে যেতে বহু সংগ্রাম করতে হয়। আজ আমরা তেমনই একজনের কথা আপনাদের জানাতে চলেছি যিনি শূন্য থেকে উঠে আকাশ ছুঁয়েছেন। আমাদের আজকের গল্পের নায়ক বাভাগুথু রঘুরাম শেট্টি, যিনি বেশি পরিচিত বি আর শেঠি নামে।

ফার্মা সেলসম্যান হিসাবে কর্মজীবন শুরু

বি আর শেঠির কর্মজীবন শুরু হয় একজন ফার্মা সেলসম্যান হিসাবে। বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি খুলে বসেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের প্রকোপে এক অপ্রত্যাশিত মোড় আসে তার জীবনে। তার ১২,৪০০ কোটি টাকার বিরাট কোম্পানি বিক্রি হয়ে যায় মাত্র ৭৪ টাকাতে! কিন্তু কীভাবে কি হলো? জানতে দেখে নিন আমাদের আজকের বিশেষ প্রতিবেদন।

WhatsApp Community Join Now

বি আর শেঠির পড়াশোনা

বি আর শেঠি ১৯৪২ সালের ১ আগস্ট কর্ণাটকের উডুপিতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর পড়াশোনা সেখানেরই এক স্থানীয় স্কুল থেকে। পরবর্তীতে মণিপাল থেকে নিজের ফার্মাসিউটিক্যাল স্টাডিজ সম্পন্ন করেন। উডুপি শহরের পৌর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদেও ছিলেন তিনি। তিনি বিয়ে করেন চন্দ্রকুমারী শেঠিকে। তাদের চারটি সন্তান হয়। ১৯৭৩ সালে শেঠি মাত্র ৬৬৫ টাকা দিয়ে চলে যান আবুধাবিতে।

সেখানেই বেশ কিছু সময় কাজ করেন ফার্মা সেলসম্যান হিসেবে। এরপর ১৯৭৫ সালে একটি ছোট ফার্মাসিউটিক্যাল ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন সেখানে। সেই কেন্দ্রের একমাত্র চিকিৎসক ছিলেন তাঁর স্ত্রী। তার নিউ মেডিকেল সেন্টার হয়ে ওঠে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থা। ব্যাক্তিগত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবসায় শীর্ষে ছিলেন শেঠি। এইভাবে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা তার। ২০১৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনে ভারতের শীর্ষ ১০০ ধনীর তালিকায় নাম আসে বি আর শেঠির।

ধনীতম ব্যক্তি হয়ে ওঠা

গত ২০১৯ সালে ৪২তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। তার ছিল ১৮,০০০ কোটি টাকার সম্পদ। বুর্জ খলিফার মতো বিখ্যাত বিল্ডিংয়ে নিজস্ব ফ্লোর রেখেছিলেন বি আর শেঠি। প্রাইভেট জেট, বিলাসবহুল গাড়ির বড় বহর ছিল তার। কিন্তু তার পতম শুরু হয় ২০১৯ সাল থেকে। তখনই ইংল্যান্ড ভিত্তিক বিনিয়োগকারী সংস্থা মাডি ওয়াটার্স কম ঋণ দেখানোর জন্য এবং নগদ বাড়ানোর অভিযোগ আনে শেঠির ওপর। ২০২০ সালের এপ্রিলে আবুধাবি বাণিজ্যিক ব্যাংক নিউ মেডিকেল সেন্টারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনে।

আরও পড়ুনঃ একাদশ শ্রেণিতে ১০ হাজার, স্নাতকোত্তরে ৬০০০০! ঘোষণা রাজ্য সরকারের, কারা পাবে?

এই ঘটনার বেশ কয়েকদিন পরই সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেঠির অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে এবং সেইসাথে তার কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দেয়। এরপর ৮ এপ্রিল ২০২০ তে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে নিউ মেডিক্যাল সেন্টার ইউকে প্রশাসনের হাতে চলে যায়। পড়তেই থাকে কোম্পানির শেয়ার। এবং শেষ অবধি ১২,৪৭৮ কোটি টাকার কোম্পানি বিক্রি হয়ে যায় মাত্র ৭৪ টাকায়! একদম রাতারাতি ভাগ্যের বদল ঘটে শেঠির জীবনে।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন