সুযোগ পেয়েও নথি যাচাইয়ে অনুপস্থিত একাংশ! দ্বিতীয় ভেরিফিকেশনের দাবি তুলল চাকরিহারারা

SSC Teacher Recruitment

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আর দেরি নয়, পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া (SSC Teacher Recruitment) দ্রুত শেষ করতে গত মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়ে গেল কাজ। বাংলা ও ইংরেজি দু’টি বিষয়ে প্রার্থীদের নথিযাচাই সম্পন্ন হল। এসএসসি সূত্রের খবর অনুযায়ী, চাকরিপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য প্রতিদিন গড়ে ১০০০ থেকে ১৫০০ জনকে বিভিন্ন বিষয়ের নথি যাচাইয়ের জন্য ডাকা হবে। কিন্তু এবার সেই নথি যাচাই নিয়ে শুরু হল এক নয়া বিতর্ক। পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেয়েও অনুপস্থিতি দেখা গেল ভেরিফিকেশনের সময়। আর এই আবহে নয়া দাবি জারি করল ‘যোগ্য’ ও নতুন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

অনুপস্থিত একাংশ চাকরিপ্রার্থী

স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৮ নভেম্বর ছিল একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন অর্থাৎ নথি যাচাইয়ের দিন। ওইদিন প্রায় ৭০০ চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও প্রার্থীদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ছ’জন। পরেরদিন অর্থাৎ ১৯ নভেম্বর বুধবার ছিল ইংরেজি বিষয়ের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, এদিন বাংলার তুলনায় আরও বেশি প্রায় ১২০০ চাকরিপ্রার্থী ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিতি চোখে পড়েছিল। হিসেব বলছিল সেই অনুপস্থিত প্রার্থী ছিল প্রায় ১৮ জন। কিন্তু কেন এমন হল? যেখানে পরীক্ষার জন্য এত আন্দোলন বিতর্ক, সেখানে পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেয়েও না আসায় অনেকের মনে সন্দেহ বাড়ছে।

কেন এই অনুপস্থিতি প্রার্থীদের?

ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন অর্থাৎ নথি যাচাইয়ের দিন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীদের অনুপস্থিতি নিয়ে যেখানে একাধিক প্রশ্ন উঠছে সেখানে দাঁড়িয়ে এক চাঞ্চল্যকর কারন উঠে এসেছে। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন , পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নথি যাচাইয়ে না আসার পিছনে ভুয়ো তথ্য দেওয়া মূল কারণ হতে পারে। আসলে তাঁরা মনে করছেন পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুপস্থিত চাকরিপ্রার্থীরা হয়তো ইচ্ছে করে ভুল তথ্য প্রয়োগ করেছিল, কিন্তু যেহেতু এখন নথি যাচাই হবে এবং আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে সেক্ষেত্রে তাই এদিন তাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেয়েও না আসায় খুব প্রকাশ করল ‘যোগ্য’ ও নতুন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

নয়া দাবি জানালো নতুন চাকরিপ্রার্থীরা

‘যোগ্য’ ও নতুন চাকরিপ্রার্থীরা দাবি জানিয়েছেন যে, “অনিচ্ছুক চাকরিপ্রার্থীরা ভেরিফিকেশনে না এলে তা বাতিল হবে। পাশাপাশি শীঘ্রই দ্বিতীয় ভেরিফিকেশন নেওয়া হোক। অর্থাৎ যাঁরা নথিযাচাইয়ে অনুপস্থিত ছিলেন এবার তাঁদের জায়গায় অন্য প্রার্থীদের সুযোগ করে দেওয়া হোক আইন মেনে। এই প্রসঙ্গে চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক মেহবুব মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘‘দীর্ঘদিন বাদে যে সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, সেখানে ভেরিফিকেশনে না আসার কোন‌ও কারণ থাকতেই পারে না। হয়ত তারা আগেই শিক্ষকতা করতেন তবুও এখানে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাই আর আসবেন না। আর দ্বিতীয়ত ভুয়ো নথি দেওয়া হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে পাথরপ্রতিমায় বিডিওর গাড়িতে আগুন! পুড়ল একাধিক বাড়ি দোকান, তদন্ত শুরু পুলিশের

উল্লেখ্য, একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাই করতে বিষয় ধরে-ধরে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। তাই ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কোনওরকম সময় নষ্ট করতে চাইছে না কমিশন। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইন্টারভিউ শুরু হতে পারে। তাই যে প্রার্থীদের নথি যাচাই হয়ে যাচ্ছে, তাঁদের আগেভাগে ইন্টারভিউ এবং লেকচার ডেমোস্ট্রেশনে ডেকে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাকি চাকরিপ্রার্থীদের দাবি মেনে দ্বিতীয় ভেরিফিকেশন করা হবে কিনা সেই নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি স্কুল সার্ভিস কমিশন।

Leave a Comment