সৌভিক মুখার্জী, হুগলি: বদলে যাবে হুগলির শিল্প (Hooghly Industry) মানচিত্র। এবার এই জেলাকে প্রথম সারিতে তুলে আনার জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উপরেই জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যার জন্য রাজ্যের শিল্প দপ্তর এবার বিরাট উদ্যোগ নিল। সূত্রের খবর, হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে এবার তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন শিল্পতালুক, যেখানে মোট ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। আর এতে করে ছোট থেকে মাঝারি ব্যবসায়ীরা প্রচুর সুবিধা পাবে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
বলাবাহুল্য, টাটা মোটরস দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে গাড়ির কারখানা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে জমি অধিগ্রহণের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় সিঙ্গুর আন্দোলন। যার জেরে টাটা মোটরস সেখান থেকে সব গুটিয়ে গুজরাটের সানন্দে গিয়ে নির্মাণ করে ন্যানো কারখানা। তবে সেই জমিকেই আবার পুনরুদ্ধার করতে ক্ষুদ্র, মাঝারি এই ধরনের শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এমনকি তার জন্য জাতীয় সড়ক লাগোয়া বোড়াই তেলের মোড়ে জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। তার চারপাশে পাঁচিল তোলার কাজও চলছে। সেখানেই কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠবে। এমনটাই জানানো হয়েছে সম্প্রতি রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত শিল্প বৈঠকে।
কৃষিভিত্তিক শিল্পের উপরেই দেওয়া হচ্ছে জোর
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, সিঙ্গুর যেহেতু কৃষিপ্রধান এলাকা, তাই সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্পের উপরে বেশি জোর দেওয়া হবে এবং তার ফলে হু হু করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেছেন, সিঙ্গুরে এখনও তিন ফসলি উন্নত জমি রয়েছে। আর এখানে ভালো পরিমাণে আলু, ধান ও আনাজের ফলন হয়। ফসলের গুণগত মান অনেকটাই ভালো। তাই আশা করা যাচ্ছে, এখানে কৃষিশিল্প খুব তাড়াতাড়ি ত্বরান্বিত হবে।
জানানো হয়েছে, আলুকে রান্নাঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে শিল্পখাতে ব্যবহার করতে উদ্যোগী শিল্প সংগঠন। কারণ, আলু দিয়ে প্রস্তুত খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা দিনের পর দিন আগ্রহ দেখাচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃষিশিল্প আরও উন্নত হবে আর কৃষকরাও সুবিধা হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সম্প্রতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার-পাঁচটি বেসরকারি শিল্পতালুক হবে হুগলিতে। রাজ্য সরকার তার জন্য ১৮০ একর জমি বরাদ্দ করেছে। এমনকি এখানে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এতে ৪০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুনঃ ফের ED-র গেরোয় অনিল আম্বানি! ১৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা
এদিকে প্রতিবেদনে এও জানানো হয়েছে যে, ধনেখালির দশঘড়ায় অবস্থিত হ্যান্ডমেড পেপার সেন্টারকে আবারও চালু করার তোড়জোড় চলছে। তার জন্য মোটামুটি ১.৭৪ কোটি টাকা খরচ করা হবে। পাশাপাশি শ্রীরামপুর পশ্চিমবঙ্গ কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিলে অতিরিক্ত কটন মেশিন স্থাপন করা হবে, আর অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নত করা হবে। তার জন্য মোটামুটি ১০.৬৬ কোটি টাকা খরচ হবে। মোদ্দা কথা, এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যে যে বিপুল পরিমাণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং শিল্প কাঠামোর প্রচুর উন্নতি হবে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।