ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রোজনামচা একঘেয়েমি কাজের ফাঁকে খানিক স্বস্তির জন্য ভ্রমণ করা অত্যন্ত জরুরী। এতে একদিকে যেমন শরীর স্বাস্থ্য সতেজ থাকে তেমনি মনও ভালো থাকে। তাইতো ভ্রমণপিপাসুরা উইকেন্ড আসলেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে সোজা পাড়ি দেয় পাহাড় বা সমুদ্রে।
এইমুহুর্তে ব্যাচালর পার্টি হোক অথবা সোলো ট্রিপ, কিংবা হানিমুন ট্রিপ, ভ্রমণপ্রেমীদের তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে গোয়া। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন বাজেটের হোমস্টে থেকে শুরু করে জিভে জল আনা সি ফুড, বাইক রাইডিং, ডলফিন স্পটিং থেকে শুরু করে ডিস্কো তাও আবার সমুদ্রের ধারেই। কিন্তু এই জনপ্রিয় পর্যটন স্থানের পিছনেও লুকিয়ে রয়েছে এক অজানা ইতিহাস।
গোয়ার মনমুগ্ধকর পরিবেশ
সৈকতের সমান্তরালে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ও তার অসংখ্য শিরা-উপশিরা দ্বারা গঠিত গোয়ার পরিবেশ এতটাই মনমুগ্ধকর যে একবার গেলে বারবার সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা জাগবে। কিন্তু জানেন কি ভারতের স্বাধীনতা এবং সংবিধান রচনা হয়ে যাওয়ার পরেও দেশের এই রাজ্য বিদেশি শক্তির অধীনে ছিল। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
গোয়ার স্বাধীনতার লড়াই!
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ১৯৪৭ সালে ১৫ আগষ্ট ভারত, ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন হলেও স্বাধীনতার প্রায় ১৪ বছর পরেও তখনও গোয়া পোর্তুগালের দখলেই ছিল। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু গোয়ায় ভারতীয় সৈন্যদের জড়ো করতে শুরু করেন। সেই কারণে উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ ভারতের ১০০টিরও বেশি যাত্রিবাহী ট্রেনের যাত্রাপথ বদলে দেওয়া হয়েছিল বেলাগাভীতে সৈন্যদের পৌঁছে দিতে। সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল পণ্যবাহী ট্রেন ব্যবহার করে। পোর্তুগাল সরকার ভেবেছিল যে, আমেরিকার কূটনৈতিক চেষ্টার মাধ্যমে ভারতের সামরিক অভিযান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব হবে। তবে তাদের চেষ্টা সফল হয়নি।
ওই বছর ১৮ই ডিসেম্বর উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিক থেকে গোয়ায় প্রবেশ করতে থাকে ভারতীয় সেনারা। ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধ চালানোর পর ‘অপারেশন বিজয়’-এর জয়ী হয় ভারতীয় সেনা। শেষে পোর্তুগালের সৈন্যেরা ভারত সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এবং গোয়া স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। তবে এই অভিযানে ভারতের ২২ জন সেনা নিহত এবং ৫৪ জন সেনা আহত হন।