ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দিন যত এগোচ্ছে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের চাহিদায় যেন হাহাকার দেখা দিচ্ছে। অন্যদিকে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম যেন আকাশছোঁয়া। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নিম্ন মধ্যবিত্তদের কপালে। তাইতো প্রাকৃতিক গ্যাসের তৎপরতা নিয়ে এবার নড়ে চড়ে বসল কেন্দ্র। গত বছর সেপ্টেম্বরে গঙ্গার নীচে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানোর মূল পাইপলাইন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ করেছে GAIL অর্থাৎ গ্যাস অথরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড। আর এই গোটা পরিকল্পনায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড অর্থাৎ BGCL এবং রাজ্যের গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন। জানা গিয়েছে কলকাতা সহ হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় ইতিমধ্যেই গ্যাস পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০টি পুরসভা এলাকায় ওই পাইপ লাইন বসবে।
সূত্রের খবর, কয়েকটি পর্যায়ে ধাপে ধাপে এই গ্যাস সরবরাহের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ের প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পদ্ধতি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দুটি গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একটি হল হুগলির মগরার রাজারামবাটী এবং অপরটি হল নদিয়ার গয়েশপুরে। প্রথমটি মগরার কেন্দ্র থেকে দিল্লি রোড হয়ে গ্যাস সরবরাহের পাইপ লাইন হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। এরপর দিল্লি রোড লাগোয়া হুগলির যে সমস্ত পুরসভা আছে, ওই গ্যাস পাইপের মাধ্যমে সেখানে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে গয়েশপুরের গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, বারাসত হয়ে কলকাতার নিউটাউন, বিধাননগর ছুঁয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর পর্যন্ত ওই পাইপ লাইন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এইভাবে পাঁচ বছরে এক লক্ষ সংযোগের লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ চলছে। আর এই প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল জোগান আসবে গেলের দুর্গাপুরের প্লান্ট থেকে।
নির্মাণকারী সংস্থার দাবি, এই গ্যাস পরিবেশবান্ধব। ফলে পরিবেশের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য। বর্তমানে রান্নার গ্যাস যে দামে কিনতে হচ্ছে, তার তুলনায় অনেক কম দামে এই গ্যাসের সুবিধা মিলবে। ফলে সাধারণ মানুষের অনেক আর্থিক সাশ্রয় হবে। এছাড়াও নির্মাণকারী সংস্থার এক পদস্থ কর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে সিলিন্ডারের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা চালু আছে। পাশাপাশি, আগামী দিনে পরিবেশবান্ধব এই গ্যাস সরবরাহের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের পয়সা বাঁচবে। দেশের যে সব রাজ্যে চালু আছে, সেখানে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ব্যবস্থা।’
কোথায় কোথায় কাজ শুরু হয়েছে?
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে রাজ্যে হুগলিতে বাঁশবেড়িয়া, চুঁচুড়া, চন্দননগর, বৈদ্যবাটী, শ্রীরামপুর পুরসভা এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। চন্দননগরে প্রায় ১২ কিমি, বাঁশবেড়িয়ায় ৯ কিমি এবং শ্রীরামপুরে প্রায় ৯ কিমি অংশে পাইপ লাইন বসানো হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বাইরেও গ্যাস সরবরাহের এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই পুনে, মুম্বই, গুজরাত, দিল্লি এবং নয়ডায় চালু আছে।
কী সুবিধা মিলবে?
এইমুহুর্তে জনসাধারণ যে মূল্যে রান্নার গ্যাস কিনছে, তার তুলনায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম টাকায় এই প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া মিলবে। শুধু তাই নয় বিদ্যুতের মতোই প্রতি বাড়িতে গ্যাসের মিটার বসানো হবে। ‘স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক মিটার প্রতি ঘণ্টা’, এই এককে কতটা গ্যাস খরচ হচ্ছে তা পরিমাপ করা হবে।