ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সামনেই সপ্তম দফার ভোট। তাই রাজ্যের শেষ লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ এর ভোটপ্রচার সাড়তে মুখিয়ে উঠেছে গোটা বাংলা। রাজনৈতিক ময়দান এখন যেন উত্তপ্ত। কিন্তু এর মাঝেই একের পর এক দুর্নীতির কলঙ্ক ছুঁয়ে চলেছে রাজ্য সরকারকে। কয়লাপাচার মামলা থেকে শুরু করে গরুপাচার মামলা। এমনকি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও জড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এবার রেশন দুর্নীতি মামলা ছাড়াও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম উঠল আরেক মামলায়। তাজ্জব গোটা বাংলা।
এইমুহুর্তে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ED র হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে দিন কাটাচ্ছে বালুদা ওরফে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। হাইকোর্টে একের পর এক জামিনের আবেদন করলেও কোনোটাই গ্রহণ করছে না আদালত। কিন্তু এবার ED র হাতে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা শাসক দলের ঘুম রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে। এমনিতেই সন্দেশখালিতে জমি দখলের ঘটনা সহ আরও নানা কাণ্ডে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান। এবার সেই মামলায় নাম উঠল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের।
চার্জশিটে উঠে এল বালু-শাহজাহানের নাম?
গতকাল অর্থাৎ সোমবারই জমি দখল মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। আর সেই চার্জশিটেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর নাম উল্লেখ রয়েছে। এর আগে রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে বালুর সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল শাহজাহানের। সেই সূত্র ধরে শাহজাহানের সরবেড়িয়ার বাড়িতে ED র তদন্তকারীরা হানাও দিয়েছিলেন। এ বার জমি দখল মামলাতেও বালু-শাহজাহান ‘যোগ’ প্রকাশ্যে এসেছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।
এমনকি সেই চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে যে শাহজাহানকে সন্দেশখালির ‘বাঘ’ তৈরির নেপথ্যে হাত ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের প্রভাব বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও তার প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায় তৃণমূল জমানায়। সরাসরি জমি দখলের সঙ্গে বালু যুক্ত ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু এ বিষয়ে শাহজাহান নাকি প্রশ্রয় পেয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর কাছ থেকেই। এমনকি বিভিন্ন বিষয়ে বালুর থেকে সমর্থন পেয়েছেন শাহজাহান।
জ্যোতিপ্রিয়-র সহযোগী শেখ শাহজাহান
এছাড়াও ED সূত্রে জানা গিয়েছে যে শাহজাহানের বিরুদ্ধে ‘পার্ক অ্যান্ড লন্ডার’-এর অভিযোগও রয়েছে। অর্থাৎ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কোনও একটি জায়গায় টাকা গচ্ছিত রাখা ছিল এবং তার পর তা বেআইনি লেনদেনের ব্যবস্থা করা এবং ‘উপযুক্ত’ ঠিকানায় জমা দেওয়ার কাজ করত শাহজাহান। তার পর সেখান থেকে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে হাজার হাজার কোটির কালো টাকা সাদা করতেন। একই সঙ্গে সন্দেশখালিতে যে টেন্ডার পাশ হত, তার দখলও শাহজাহানের ‘প্রভাবে’ আপনা-আপনিই তাঁর ভাই পেতেন বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে খবর। তবে শাহজাহানের টাকা কোথায় কোথায় গিয়েছিল এবং কী ভাবে বিনিয়োগ হয়েছিল, সেই সম্পর্কে তথ্য এখনও মেলেনি। খুব শীঘ্রই তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন গোটা ব্যাপারটা।