ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ম অনুযায়ী ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় আমূল পরিবর্তন হতে দেখা গিয়েছে। শুধু সিলেবাস পরিবর্তন নয়। পরীক্ষার প্যাটার্নও বেশ পরিবর্তন হয়েছে প্রতিটি শ্রেণির। পাশাপাশি একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতেও এবার সংযুক্ত হয়েছে সেমিস্টার পদ্ধতি। কিন্তু এসবের মাঝেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ঘটিয়ে ফেলল এক মস্ত বড় ভুল। যা পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ সুশিক্ষার ক্ষেত্রে এক গভীর এবং জটিল প্রশ্ন তুলে ধরেছে।
প্রত্যেক বছরের মতো চলতি বছরেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদিত বিষয়ভিত্তিক সমস্ত বই বিভিন্ন ভাষায় ছাপানো হয়েছে। এবং সেই সকল বই ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই সকল ছাত্র ছাত্রীদের প্রদান করে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ স্বীকৃত বইতেই উঠে এল ভুল তথ্য। আর সেই ভুল তথ্য উঠে এসেছে অষ্টম শ্রেণীর গণিত বইয়ে।
বড় ভুলের সম্মুখীন হল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
অষ্টম শ্রেণি হল মাধ্যমিক পর্যায়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। বলা যায় এই সময় থেকে ছাত্র ছাত্রীরা স্কুল জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা অর্থাৎ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এদিকে সেই শ্রেণির গণিত বইতেই উঠে এল এক ভয়ংকর ভুল। সূত্রের মারফৎ জানা গিয়েছে ইংরেজি ভাষায় অষ্টম শ্রেণির যে ‘গণিতপ্রভা’ বইটি রয়েছে, সেই বইয়ে ভুল তথ্য ছাপানো হয়েছে। যা প্রথমে নজরে আসে অষ্টম শ্রেণীর এক পড়ুয়ার। সেই ছাত্রী জানায়, তাদের গণিতের ইংরেজি বইতে ত্রিভুজ এবং পঞ্চভুজ উভয় ক্ষেত্রেই নাকি ভুল তথ্য দেওয়া রয়েছে। সাধারণত আমরা সকলেই জানি ত্রিভুজের তিনটি কোণ থাকে। কিন্তু ওই বইতে দুটি কোণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়। সেই বইতে পঞ্চভুজকে ইংরেজিতে বলা হয়েছে ‘পেটাগন’। যেটার আসল উচ্চারণ ‘পেন্টাগণ’।
তবে শুধু যে গণিত বইতেই ত্রুটি রয়েছে, তা কিন্তু নয়। আরও নানা ছোট বড় ভুল ধরা পড়েছে বিভিন্ন বিষয়ের বইগুলিতে। যা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে এসেছে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক মহলের একাংশের মধ্যে। জানা গিয়েছে ২০১২-১৩ সালে শেষ বারের মতো মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন হয়েছিল। তারপরে পরিবর্তন হয়ে আসছে বইয়ের মলাট সহ বইয়ের পরিবেশন পদ্ধতি। কিন্তু ভুল ভ্রান্তি বিষয়ক কোনো পরিবর্তন হয়নি।
শিক্ষামহলে উঠে এল ভয়ঙ্কর অভিযোগ
এই বিষয়ে নারকেলডাঙা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘শুধু অষ্টম শ্রেণির গণিত বই নয়, এই সরকারের আমলে যত পাঠ্যপুস্তক তৈরি হয়েছে প্রায় সব বইয়ে কিছু না কিছু ভুল রয়েছে। কিছু বইয়ে আবার অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয়ও রয়েছে। অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে বহু দুর্নীতিগ্রস্ত জেল খাটা আসামীদের নাম রয়েছে। এগুলো সবই সংশোধন করা উচিত বলে আমরা মনে করি।’ পাশাপাশি যাদবপুর বিদ্যাপীঠের গণিত বিষয়ের শিক্ষক সমরকুমার পাইক বলেন, ‘আমার বিষয়টি এখনও গোচরে আসেনি। তবে, এই ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকে। যেগুলি আমরাই ঠিক করে দিই। পর্ষদের উচিত এই বিষয়গুলি খুঁটিয়ে দেখা, যাতে পরবর্তী সময়ে এমন ভুল না হয়।’ এদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি ঋতব্রত চটোপাধ্যায় বলেন, ‘আমারা এখনও এই বিষয়ে কিছু জানি না। এই বিষয়গুলি সিলেবাস কমিটি পর্যালোচনা করে। তবে, ভুল থাকলে তা দ্রুত সংশোধন করা হবে।’