প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০১৬ সালের এসএসসি (WBSSC) প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে চাকরি হারিয়েছিল প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ দিন বাদে স্কুল সার্ভিস কমিশনে ফের শিক্ষক নিয়োগের শুরু হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল, এবার পালা ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার অর্থাৎ নথি যাচাইয়ের। গত মঙ্গলবার থেকে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেন ২০১৬ এর তথাকথিত ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকদের কয়েকজন, আবার নতুন কয়েকজন পরীক্ষার্থীও। কিন্তু তাতেও দেখা গেল বিরাট গরমিল। ভেরিফিকেশনে প্রথম তিনদিনেই মোট ২৬ জন প্রার্থীর নথিতে ভুল বা ভুয়ো তথ্য প্রকাশ্যে এল।
ভেরিফিকেশনে ভুয়ো নথি!
এসএসসির তরফে জানানো হয়েছে আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সিলেক্টেড প্রার্থীদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া তাই সেক্ষেত্রে নথি যাচাইকরণ শীঘ্রই শেষ করতে গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে প্রক্রিয়া। কিন্তু এত অপেক্ষার পরে ইন্টারভিউয়ে ডাক পেয়েও নথি যাচাই করতে আসেননি অনেকেই, আর তাতেই চোখ রাঙাচ্ছে সকলে। এমতাবস্থায় নিয়োগের নথি যাচাই করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল। জানা গিয়েছে তিনদিনে ২৬ জন প্রার্থীর ভুয়ো নথি ধরতে পেরেছে এসএসসি। নজরকাড়া বিষয় হল সেই নথি গুলির বেশিরভাগই ১০ নম্বরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা-সংক্রান্ত তথ্যে গরমিল রয়েছে। আর এই ২৬ জনের মধ্যে ১৪ জন একাদশের এবং ১২ জন দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থী।
আনতে হবে প্রধান শিক্ষকের তরফে দেওয়া নথি
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে প্রথমদিন বাংলা ও পরের দুই দিনে ইংরেজি ও ইতিহাস বিষয়ের শিক্ষক পদের জন্য ভেরিফিকেশন বা নথি যাচাইকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ভেরিফিকেশনেও দেখা যাচ্ছে দুর্নীতি। এই প্রসঙ্গে চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তরফে চিন্ময় মণ্ডল জানিয়েছেন, নথি যাচাই করার সময়ে যে সব জরুরি ডকুমেন্ট লাগছে তার পাশাপাশি যে স্কুলে তিনি কর্মরত সেখান থেকে প্রধান শিক্ষককে দিয়ে স্কুলে প্যাডে একটি নথি লিখিয়ে আনতে বলা হয়েছে এসএসসির তরফে। সেখানে প্রধান শিক্ষকের সই ও সিল রাখতে হবে। চিঠিতে লিখতে হবে যে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এতকাল তাঁর স্কুলেই পড়িয়েছেন। কিন্তু অনেকেই সেই নথি নিয়ে যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট! ফিরল ২৫ জনের চাকরি
প্রসঙ্গত, কমিশনের তরফে জানা গিয়েছে নথি ভেরিফিকেশন সময় ২৬ জনের বেশিরভাগ প্রার্থী শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ভুয়ো নথি দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ জাতির শংসাপত্র ভুয়ো দিয়েছেন। কেউ বা অন্য কোনো তথ্য, তবে এটি ইচ্ছাকৃত ভুল না অন্য কিছু, সেই সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যদি সেক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, আগামী সপ্তাহে নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।