SIR চাপে নদিয়ায় আত্মঘাতী BLO! সুইসাইড নোটে কমিশনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ

BLO Commits Suicide

প্রীতি পোদ্দার, নদীয়া: জলপাইগুড়ির পর এবার নদীয়া ! SIR এর কাজের চাপে ফের বুথ লেভেল অফিসারের আত্মহত্যার (BLO Commits Suicide) খবর উঠে এল। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরের ষষ্ঠীতলায় এক বিএলও রিঙ্কু তরফদার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন। তিনি একটি সুইসাইড নোটও লিখে গিয়েছেন। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, ফের BLO দের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

ঠিক কী ঘটেছে?

রিপোর্ট মোতাবেক, নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ষষ্ঠীতলায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন ৫৩ বছর বয়সী বুথ লেভেল অফিসার রিঙ্কু তরফদার। তদন্তের নিরিখে মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। সেখানে মেয়েদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, “বাবার খেয়াল রাখিস। আমার কিছুই করার নেই। আমার সংসার ছেড়ে যেতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। নিজে হাতে করে এই সংসার পাতা।” এরপরই লেখা রয়েছে, “বিএলও কাজ তুলতে না পারলে প্রশাসনিক চাপ আসলে তা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।” আর এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে।

সুইসাইড নোটে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী BLO-র

উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে আত্মঘাতী বিএলও রিঙ্কু তরফদার নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে লিখেছেন, “আমার এই পরিণতির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। খুবই সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই অমানুষিক কাজের চাপ আমি নিতে পারছি না। আমি একজন পার্শ্বশিক্ষিকা। বেতন পরিশ্রমের তুলনায় খুবই কম। কিন্তু, এরা আমাকে ছাড় দিল না। আমার স্বামী, ছেলে, মেয়ে কেউ দায়ী নয়। ওরা আমাকে খুবই যত্নেই রাখে।” পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মঘাতী BLO অফিসার রিঙ্কু তরফদার নদিয়ার চাপড়া থানার বাঙালঝি এলাকার স্বামী বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পার্শ্বশিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে বিএলও-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজে তিনি ব্যাপক ভাবে দুশ্চিন্তার শিকার হয়েছেন।

আরও পড়ুন: সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত নিষিদ্ধ! রাস্তায় গাড়ি পার্কিং নিয়ে বড় নির্দেশ KMC-র

মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, কম্পিউটারে তেমন দক্ষ না হওয়ায় শুরু থেকেই তিনি গভীর মানসিক চাপে ছিলেন। তার উপর প্রশাসনিক চাহিদা, কাজের টার্গেট পূরণের চাপ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আতঙ্কে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শিক্ষিকা। খাওয়া ঘুম উড়ে গিয়েছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত বাড়ির এক ঘর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। শোকাহত গোটা পরিবার। এর আগেও জলপাইগুড়ির মালবাজারে বিএলও-র কাজের চাপে এক মহিলার আত্মহত্যার অভিযোগ উঠে এসেছিল। সেই সময় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে কমিশনকে চিঠিও লেখেন তিনি। এমতাবস্থায় আরও এক বিএলও-র আত্মহত্যার ঘটনা আরও পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।

Leave a Comment