সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমানে বঙ্গজুড়ে চলছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। তবে ২০০২ সালের লিস্টে যাদের নাম নেই তাদেরকে কমিশন নির্ধারিত যেকোনও ১১টি ডকুমেন্টের মধ্যে একটি দিতে হচ্ছে। আর এর মধ্যে রয়েছে জন্ম সার্টিফিকেট বা জন্ম শংসাপত্র। কিন্তু এখন তো ডিজিটালের যুগ। পুরনো দিনের সেই হাতে লেখা সার্টিফিকেট এখন আর গ্রহণ করা হবে না। তাই অনলাইনের মাধ্যমেই বানিয়ে নিতে হবে ডিজিটাল সার্টিফিকেট (Digital Birth Certificate)। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে বানাবেন? জানতে হলে অবশ্যই প্রতিবেদনটি পড়ুন।
কেন ডিজিটাল জন্ম সার্টিফিকেট দরকার?
আসলে ডিজিটাল জন্ম সার্টিফিকেটে থাকবে নিরাপদ কিউআর কোড, অনলাইন ডাউনলোডের সুবিধা, আর যেকোনও অফিসে সরাসরি স্ক্যান করে যাচাইয়ের সুবিধা। অন্যদিকে হাতে লেখা সার্টিফিকেটে লেখা অস্পষ্ট থাকতে পারে। পাশাপাশি অনেক দপ্তরে যাচাই করতেও সময় লাগে। এমনকি ভুল তথ্যের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই বর্তমান সময়ে ডিজিটাল জন্ম সার্টিফিকেটকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
কোন কোন ক্ষেত্রে জন্ম সার্টিফিকেটকে ডিজিটাল করা যাবে?
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে আপনি আপনার জন্ম সার্টিফিকেটকে সরাসরি ডিজিটাল সার্টিফিকেটের রূপান্তর করতে পারবেন—
- যদি জন্ম ১৯৯৯ সালের অক্টোবরের পরে হয়, তাহলে পঞ্চায়েত বা পৌরসভায় রেজিস্টার্ড হলে ডিজিটাল করা যাবে।
- ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে জন্ম হলে যদি রেকর্ড থেকে থাকে, তাহলে ডিজিটাল করা যাবে।
- ১৯৮৭ সালের আগে হাসপাতাল থেকে জন্ম সার্টিফিকেট ইস্যু করা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ডিজিটালাইজ করা যাবে না।
- যদি রেজিস্ট্রেশন নম্বর স্পষ্ট থাকে, তাহলে আসল সার্টিফিকেট না থাকলেও ডিজিটালাইজ করা যাবে।
- আর যদি কোনও নথি না থাকে, তাহলে প্রথমে নতুন রেকর্ড যাচাই করতে হবে, তারপর ডিজিটালাইজ করতে হবে।
কীভাবে বানাবেন ডিজিটাল জন্ম সার্টিফিকেট?
আপনার জন্ম সার্টিফিকেট ডিজিটাল করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে—
- প্রথমে স্থানীয় পৌরসভা বা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যেতে হবে।
- এরপর সেখানকার কর্মকর্তারা আপনার হাতে লেখা সার্টিফিকেটকে দেখে রেজিস্ট্রেশন নম্বর মিলিয়ে দেখবে।
- এরপর আপনাকে ফর্ম-A পূরণ করতে হবে।
- এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যাচাই করার ডিজিটাল রেকর্ড তৈরি করা হবে।
- তবে হ্যাঁ, আপনার মোবাইল নম্বর অবশ্যই জন্ম রেকর্ডের সঙ্গে লিঙ্ক থাকতে হবে। কারণ, ভবিষ্যতে ডাউনলোড করতে গেলে ওটিপি লাগবে।
- আর রেকর্ড অনুমোদন হলেই আপনি জন্ম-মৃত্যু তথ্যের ওয়েবসাইট থেকে যখন খুশি সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
জন্ম সার্টিফিকেট ডিজিটাল করতে গেলে হাতে যে সমস্ত ডকুমেন্টগুলি রাখতে হবে সেগুলি হল—
- হাতে লেখা আসল জন্ম সার্টিফিকেটের কপি,
- বাবা-মায়ের আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড,
- রেজিস্ট্রেশন নম্বর,
- সাম্প্রতিক তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি,
- সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে অবশ্যই থানার জিডির কপি দরকার।
বলাবাহুল্য, বর্তমানে এসআইআর চলছে। তাই এক্ষেত্রে বয়সের প্রমাণপত্রের জন্য সবথেকে নির্ভরযোগ্য ডকুমেন্ট এই জন্ম সার্টিফিকেট। কারণ, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি বা সংশোধনের ক্ষেত্রে জন্ম সার্টিফিকেট কার্যকর বলেই জানিয়েছে কমিশন। তাই আজই আপনার জন্ম সার্টিফিকেটকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করুন।