ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সরকারী কোনও কাজে বিনা বাধা ছাড়া সম্পূর্ণ করতে অনেক সরকারী কর্মীরা ঘুষ নিয়ে থাকেন। এটা কোনো নতুন কথা নয়। টেবিলের নীচ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে সাধারণ মানুষের ঘাড় ঘোরানো এক প্রকার স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে তাঁদের। সে নেতা হোক কিংবা কর্মী। কিন্তু সম্প্রতি এই ঘুষের কারণেই এবার কপাল পুড়ল এক সরকারী কর্মীর। যার ফলে ‘ঘুষ’ নেওয়ার আগে এখন থেকে দশবার ভাববেন সরকারি কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে শক্তিভেল নামের একজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তখন থেকেই শুরু হয় মামলা। কিন্তু মামলা চলাকালীন অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক শক্তিভেলের মৃত্যু হয়। এবার সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত করা হল শক্তিভেলের স্ত্রী দেবিনায়কিকে। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম উঠল তাঁর।
মাথায় বাজ সরকারী কর্মীদের!
আসলে শক্তিভেল নামের অভিযুক্ত সেই পুলিশ আধিকারিকের আয়ের নিরিখে সম্পত্তির পরিমাণে অনেক অসঙ্গতি দেখা গিয়েছিল। যার দরুণ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় আদালতে। কিন্তু সেই পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যু হওয়ায় আদালত এবার এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে তাঁর স্ত্রী দেবিনায়কি। কিন্তু সেই রায় মানতে নারাজ দেবিনায়কি। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানান তিনি। কিন্তু সুরাহা কিছুই হল না।
সম্প্রতি মাদ্রাস হাই কোর্টের মাদুরাই বেঞ্চে দেবিনায়কি আর্জি জানালে বিচারপতি কেকে রামাকৃষ্ণন সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি জানান, ‘এই দেশে দুর্নীতি অকল্পনীয়ভাবে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি বাসা থেকে শুরু হয় এবং সরকারি কর্মীর স্ত্রী যদি দুর্নীতির পক্ষে থাকে, তাহলে এই দুর্নীতির কোনও শেষ নেই। ঘুষের অর্থের কারণে দেবিনায়কির জীবন আরামদায়ক হয়ে উঠেছিল। তাই তাঁকে এখন এর পরিণতি ভোগ করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।’
বড় শিক্ষা ঘুষ খাওয়া কর্মীদের
এছাড়াও আদালত এই আবহে পর্যবেক্ষণ করে জানায় যে ‘যদি সরকারি কর্মীদের স্ত্রীরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়, তাহলে তো দুর্নীতি কোথাও শেষই হবে না। সরকারি কর্মীদের স্ত্রীদের দায়িত্ব, স্বামী ঘুষ নিলে তা নিতে বারণ করা। কেউ যদি ঘুষ নেয়, তাহলে সে শুধু নিজের নয়, নিজের পরিবারেরও সর্বনাশ করে। যদি কেউ ঘুষের টাকায় ফুর্তি করে থাকে, তাহলে সেও পারের ভাগিদার। তাকেও শাস্তি পেতে হবে।’