যুদ্ধ থামিয়ে ইতিহাস লিখেছিলেন তাঁরা! দেখুন শান্তিতে নোবেল জয়ী ১০ কিংবদন্তির তালিকা

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শান্তির খোঁজে বদলে দিয়েছিল ইতিহাস! হ্যাঁ, যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভাজন, পরমাণু হুমকি আর দুঃসাহসিক সংকটের মুখে পড়েও ইতিহাসে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা শান্তির পতাকা উঠিয়ে দাঁড়াতে সাহস করতেন। আর আজ আমরা ফিরে দেখব সেই 10 জন বিশ্ব নেতাকে, যারা নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Prize) পেয়ে ইতিহাসে নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিয়ে গিয়েছেন। 

উড্রো উইলসন (যুক্তরাষ্ট্র)

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখেছিলেন উড্রো উইলসন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নয়া দিগন্ত খুলতে তিনি তৈরি করেছিলেন লিগ অফ নেশনস। যদিও এটি পরে জাতিসংঘে রূপ নেয়, তবে উইলসনের প্রচেষ্টায় আধুনিক কূটনৈতিক ভিত আরও পাকাপোক্ত হয়। জানা যাচ্ছে, 1919 সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

গুস্তাভ স্ট্রেসেমন (জার্মানি)

সূত্র খতিয়ে জানা গেল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি এবং ফ্রান্সের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গুস্তাভ স্ট্রেসেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তার সবথেকে উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক সাফল্য ছিল Locarno Treaty। আর এই পুরস্কার তিনি ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন ফরাসি নেতা আরিস্তিদ ব্রিয়ান্দের সঙ্গে। 

উইলি ব্র্যান্ড্ট (জার্মানি)

শীতল যুদ্ধের সময় ওস্তপলিটিক নামক নীতি গ্রহণ করে পূর্বে ইউরোপের সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল এই উইলি ব্র্যান্ড্ট। তার নীরব নতজানু সম্মান গোটা বিশ্বের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনিও শান্তির ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে গিয়েছিলেন।

আইসাকু সাতো (জাপান)

পারমাণবিক বোমার ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে জাপানের এই প্রধানমন্ত্রী নিউক্লিয়ার নিরস্ত্রীকরণে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পক্ষে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাই তিনি এই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন।

আনোয়ার সাদাত (মিশর) ও মেনাখেম বেগিন (ইজরায়েল)

মিশর এবং ইজরায়েল দুই শত্রু দেশ। তবে Camp David Accords-র মাধ্যমে সেই দীর্ঘযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিলেন এই দুই সহৃদয় ব্যক্তি। এই ঐতিহাসিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই দুজনকে তখন নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

মিখাইল গর্বাচেভ (সোভিয়েত ইউনিয়ন)

খোলামেলা ভাবনা এবং পুনর্গঠন নীতির জেরে তিনি ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটান। সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ নেতা হিসেবে তিনি ইতিহাসের শান্তির বার্তা লিখেছিলেন। আর সে কারণেই তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পকেটে ভরতে পেরেছিলেন।

নেলসন ম্যান্ডেলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)

27 বছর জেলে কাটানোর পর প্রতিশোধের বদলে ক্ষমা এবং মিলনের পথে হেটেছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এফডব্লিউ ডি ক্লার্কের সঙ্গে মিলে আপারথাইডের অবসান ঘটিয়েছিলেন তিনি। আর এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের জন্যই তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। 

জিমি কার্টার (যুক্তরাষ্ট্র)

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার বিশ্বজুড়ে শান্তির বার্তা ছড়াতে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। নির্বাচন, পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে মানবাধিকার রক্ষা, সংঘর্ষ বিরোধ, সবেতেই ছিল তার জুড়ি মেলা ভার। আর সে কারণেই বিশ্ববাসীর আস্থা অর্জন করে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ ফিরল স্মার্ট মিটার আতঙ্ক! বড় নির্দেশিকা জারি সরকারের

বারাক ওবামা (যুক্তরাষ্ট্র)

প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং পারমাণবিক অস্ত্র হানার প্রচেষ্টা তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতিয়েছিল। যদিও অনেকের কাছে এই পুরস্কার বিতর্কিত ছিল। তবুও শান্তির স্বপ্নকে সেলাম জানিয়ে তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

Leave a Comment