ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে অনেক দিন ধরে। অনশন করে দিনের পর দিন রাস্তায় রাত্রিযাপন করে গলা ফাঁটিয়েছে চাকরির দাবিতে। এমনকি নিয়োগ দুর্নীতির একের পর এক ভয়ঙ্কর ছায়ার প্রভাব পড়েছিল চলতি বছরের লোকসভা কেন্দ্রে। ইতিমধ্যেই শাসক দলের একাধিক তাবড় তাবড় নেতা নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে জেলের ঘানি টানছে। তবে সম্প্রতি ফের আরও একবার খবরের শিরোনামে উঠে এল নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। আদালতে এক চাঞ্চল্যকর চার্জশিট পেশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED।
সম্প্রতি ED চার্জশিটে দাবি করেন যে নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ভাঙার উদ্দেশে বিক্ষোভকারীর মধ্যে কয়েকজনকে বেআইনি নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। জানা যায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওই নিয়োগ হয়েছিল। নবম এবং দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৮৩ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই ১৮৩ জনের মধ্যে তিন জনের চাকরির সুপারিশ এসেছিল শিক্ষা দফতর থেকে। বিক্ষোভ দমন করার জন্যই তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
নিয়োগ দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর দাবি EDর!
এছাড়াও ED দাবি করেছে যে নবম-দশমের মত একই ভাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্যানেল মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৩৯ জনের নাম বেআইনি ভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল। আবার ওই ৩৯ জনের মধ্যে ৯ জনের নাম রাজ্যের শিক্ষা দফতর নিজে থেকে সুপারিশ করেছিল। আর সেই ৯ জনই ছিলেন আসলে বিক্ষোভকারী। আর এই গোটা প্রক্রিয়ায় নাম উঠে এসেছে তিনজনের। অর্থাৎ মিডলম্যান’ হিসেবে নাম উঠে এসেছে প্রদীপ সিংহ ওরফে ছোটু, শান্তিপ্রসাদ এবং SSC র আধিকারিক সমজিৎ আচার্জ। গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, এই বিক্ষোভকারীদের সুপারিশপত্রের ‘প্রিন্ট’ করিয়েছিলেন সমজিৎ।
বিরোধী পক্ষের প্রতিক্রিয়া
ইতিমধ্যে গত এপ্রিলে EDর হাতে গ্রেফতার হন অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ। এর আগে বেশ কয়েকবার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলাতেও বার বার তাঁর নাম উঠে এসেছে। প্রথমদিকে ২০২২ সালের ১০ অগস্ট শান্তিপ্রসাদকে গ্রেফতার করেছিল CBI। পরে ৯ সেপ্টেম্বর আবার তাঁকে CBI হেফাজতে নেয় তাঁকে। এরপর ED র হাতেই গ্রেফতার হন তিনি। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এ হেন অভিযোগ বিরোধী শিবিরে এক বড় ইস্যু তৈরি করেছে। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কাজই হল কোথাও কোনও বিক্ষোভ হলে প্রথমে বৈঠকের নামে প্রলোভন দেওয়া, তাতে কাজ না হলে ভয় দেখানো। তাতেও কাজ না হলে তাদের চাকরি বা টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করা। এখানেও তাই হয়েছে।’