ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির খবর রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বঙ্গে। এমনকি এই দুর্নীতির কালো অন্ধকার ছাড়েনি শিক্ষা ক্ষেত্রকেও। SSC দুর্নীতি থেকে শুরু করে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে, সবেতেই যেন তাবড় তাবড় নেতাদের গুন্ডামির তথ্য উঠে আসছে ED এবং CBI এর চার্জশিটে। কিন্তু সম্প্রতি ভোটের পরে রাজ্য সরকার আরও একটি বিস্ফোরক মামলার মুখোমুখি হল। যার দরুণ আশার আলো দেখতে পেলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসাগুলিতে নিয়োগের পরীক্ষা শেষ হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু পরীক্ষার ১৪ বছর পেড়িয়ে গেলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি। এদিকে সূত্রের খবর, মাদ্রাসায় এই মুহূর্তে ৩,০০০ টি শূন্যপদ রয়েছে। কেন এতদিন ধরে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ হচ্ছে না এই বিষয়ে অনেকদিন ধরেই মামলা চলছিল হাই কোর্টে। এবার সেই মামলা নিয়ে ফের ক্ষোভের মুখে পড়ল কলকাতা হাই কোর্ট। গতকাল এই মামলার বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল।
শূন্যপদ থাকলেও নিয়োগ ক্ষেত্রে গাফিলতি!
এদিন মামলাকারীরা আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চ ওই শূন্যপদ ১৪ দিনের মধ্যে পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। পরের বছর একক বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু তার পরেও নিয়োগ হয়নি। এদিকে সেই সময় কোভিড পরিস্থিতির থাকায় নির্দেশ কার্যকর করার জন্য আদালতের কাছে আরও ছ’মাস সময় চেয়েছিল কমিশন। কিন্তু সেই ছ’মাস পেরিয়ে গেলে ভয়াবহ কোভিডের পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে আরও ছ’মাস সময় নেওয়া হয়। এ ভাবে বেশ কয়েক বার সময় নিয়েও এখনও অধরা তিন হাজার গ্ৰুপ-ডি পদের নিয়োগ।
আরও পড়ুনঃ পরিস্থিতি জটিল, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দু’বছর জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে খারাপ খবর
অন্যদিকে পাল্টা জবাব দেয় মাদ্রাস কমিশন। তাঁদের দাবি তারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ শুরু করতে চায়। কিন্তু সেই প্রস্তাব শোনামাত্র তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে আদালত। সরাসরি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন হাই কোর্টের দুই বিচারপতি অর্থাৎ বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের। ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ‘আর অতিরিক্ত কোনও সময় নয়, তিন মাসের মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কমিশনকে। শুধু তাই নয়, এত দিন সময় নিয়েও নির্দেশ পালন না করার জন্য ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।’ আদালতের এই নির্দেশে প্রায় ১৪ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলে আশা করছে চাকরিপ্রার্থীরা। পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলির শূন্যপদ পূরণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যকারিতা ও মান উন্নত হবে বলে এমনটাই মনে করছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।