ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দেখতে দেখতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের প্রায় ১৮ মাস পার হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে নতুন করে রিপোর্ট পেশ করল ED-CBI। গত বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু ED এবং CBI এর তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে কার্যত ক্ষুব্ধ বিচারপতি অমৃতা সিনহা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ED-র দেওয়া রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
গত বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে ED আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, তারা এখনও পর্যন্ত ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ থেকে ১৪৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। যার বাজারমূল্য অন্তত ২৫০ কোটি টাকা। এদিকে আবার মঙ্গলবারই ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সাড়ে ১৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু এ হেন রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন বিচারপতি। এর পরেই ED র উদ্দেশে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন, ‘কোম্পানি আর কোম্পানির ডিরেক্টরদের সম্পত্তির পরিমাণ এত কম কেন? আপনারা যে রিপোর্ট দিচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে, এই সংস্থার নিজস্ব কোনও আয়ের উৎস নেই। টাকা অন্য কোথা থেকে আসছে। কোথা থেকে ওই টাকা এসেছে, তা কি আপনারা খুঁজে দেখেছেন?’
তদন্তে ED-র ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি!
এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে গাফিলতি নিয়ে ED-কে একের পর এক কড়া মন্তব্যে ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের কিছু আধিকারিককে সতর্ক হতে বলুন। আদালতের কাছেও বিভিন্ন তথ্য আসছে এবং রিলায়েবল সোর্স থেকেই সেই তথ্যগুলো আসছে। কিছু আধিকারিকের মধ্যে তদন্তে গাফিলতির প্রবণতা দেখা দিয়েছে। কাকে তদন্ত করা হবে, কাকে তদন্ত করা হবে না তা নিয়ে বাছবিচার করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ছড়িয়েছে বার্ড ফ্লু! চিকেন, ডিম খাওয়া নিয়ে বড় বার্তা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
অন্যদিকে এদিন আদালতে মুখ বন্ধ করা একটি খামের ভিতরে একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দেয় CBI। এবার সেই রিপোর্ট নিয়েও প্রকাশ্যে মুখ খোলেন বিচারপতি। জানা যায়, সেই রিপোর্টে CBI লিখেছে, একজন প্রভাবশালীর অ্যাকাউন্টে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির ৩০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। এমনকি এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণও পেয়েছে CBI। এছাড়াও জানা গিয়েছে, একজন এজেন্ট এই টাকা তুলেছেন। তারপর সেই টাকা একজন মিডলম্যান কোম্পানির মাধ্যমে ওই প্রভাবশালীর কোম্পানিতে ঢুকেছে। শুধু প্রাথমিক নয়, SSC ও পুরসভা দুর্নীতির টাকা মিলে মিশে পৌঁছেছে প্রভাবশালীর সংস্থার অ্যাকাউন্টে। খুব শীঘ্রই এই তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে উদ্ধার করা টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে। জানা গিয়েছে আগামী ৩০ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।