ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: আবহাওয়ার আপডেট অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির দেখা পেল এখনও মিলল না। আকাশ মেঘলা হয়ে থাকলেও বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ এতটাই বেশি যে ভ্যাপসা প্যাচপ্যাচে গরমে এক্কেবারে নাজেহাল অবস্থা সকলের। তার উপর কিছুদিন আগেই রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলগুলি ইতিমধ্যেই গরমের ছুটি কাটিয়ে খুলে গিয়েছে।
চলতি বছরে গরমের দাপট এতটাই বেশি ছিল যে বাধ্য হয়েই রাজ্য সরকার নির্ধারিত সময়ের আগেই গরমের ছুটি ঘোষণা করেছিল। গত ৬ মে থেকে গরমের ছুটি পড়ার কথা ছিল, কিন্তু সেই ছুটি আগেভাগেই ২২ এপ্রিল থেকে ঘোষণা করা হয়। তবে হিসেব অনুযায়ী ৩ জুন ছুটি শেষ হওয়ার কথা উঠলেই সেদিন থেকে কিন্তু শুধু শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। এবং ১০ জুন থেকে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতির মাধ্যমে স্বাভাবিক পঠনপাঠনের ধারা শুরু হয়েছিল। তাই বলতে গেলে গরমের কারণে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ দিন ছুটি কাটাতে হয়েছিল পড়ুয়াদের। ফলে অনেকটাই ব্যাঘাত ঘটেছিল পড়াশোনায়।
পিছিয়ে পড়া সিলেবাস পূরণ করতে নয়া উদ্যোগ
এদিকে স্কুল খোলার পরেও ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রা এবং প্রবল তাপপ্রবাহের কারণে কয়েকটি স্কুলে স্বাভাবিক সময়ের পরিবর্তে সকালে পঠন-পাঠন চলছে। ফলে সেখানেও সমস্ত ক্লাস পূর্ণ সময় করানো যাচ্ছে না। অথচ সামনেই দ্বিতীয় সামেটিভ পরীক্ষা৷ তাই এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়ারা যাতে সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমের পাঠ শেষ করতে পারে তার জন্য এক অভিনব উদ্যোগ নিল সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল হাইস্কুল। আর তা হল প্রতি সপ্তাহে ছুটির দিন অর্থাৎ রবিবার করে বিশেষ ক্লাস নেওয়া।
ওই স্কুলের শিক্ষক তাপস ঘোষ জানান, ‘টানা ৫০ দিন গরমের ছুটি থাকায় পড়ুয়াদের পড়াশোনায় অনেক ঘাটতির দেখা গিয়েছিল। এদিকে সামনেই দ্বিতীয় সামেটিভ। তাই কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই যাতে ঘাটতি যতটা সম্ভব পূরণ করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই ছুটির দিনে এই উদ্যোগ৷ পড়ুয়াদের ভাল আগ্রহ রয়েছে, তাই আশা করছি আগামীতেও এই উদ্যোগ চলবে।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীর ভান্ডার তো হলই, এবার বার্ধক্য ভাতা নিয়ে যা করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার! ধন্য ধন্য করছে সবাই
জানা গিয়েছে প্রত্যেক সপ্তাহে আলাদা আলাদা শ্রেণির ইচ্ছুক পড়ুয়াদের নিয়ে এই বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম দিনে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের অঙ্ক, বাংলা ও ভূগোলের ক্লাস নেন স্কুলের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। এবং পরের দিন অন্য কোনো শ্রেণীর ইচ্ছুক পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস নেন শিক্ষকেরা। এর ফলে পিছিয়ে থাকা বিষয়গুলি ঝালিয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ পাচ্ছে পড়ুয়ারা৷ সেই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই স্কুল খোলার পরেই সমস্ত পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে তাঁদের সিদ্ধান্তে আদৌ রাজি হবে কিনা পড়ুয়ারা তথা অভিভাবকরা, তা বিয়ে বেশ সংশয় ছিল। কিন্তু প্রথম দিনে পড়ুয়াদের উপস্থিতি এতটাই বেশি ছিল, যেসকলেই চমকে গিয়েছিল।