ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: চলতি বছর লোকসভা নির্বাচন রাজ্য রাজনীতিতে একপ্রকার বিধ্বংসী ঝড় এনে দিয়েছিল। ভোট দখলের লড়াইয়ে জিততে এক অপরের বিরুদ্ধে হাজারও অভিযোগ জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেছিল তাবড় তাবড় নেতা মন্ত্রীরা। কিন্তু গত মাসে নির্বাচনী পর্ব মিটতেই এবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে ভোট পরবর্তী হিংসা। যার দরুণ প্রাণ যায় এক বিজেপি কর্মীর।
সূত্র মাধ্যম জানা গিয়েছে, ডেবরার ওই বিজেপি কর্মীর নাম সঞ্জয় বেরা। বয়স ৪২। লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন অর্থাৎ ৪ জুন, ডেবরায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে গ্রেফতার হন সেই বিজেপি কর্মী। কিন্তু শোনা যায়, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে ক্ষিপ্ত ভারতীয় জনতা পার্টি। তাঁর মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। গোটা ঘটনার CBI তদন্তের দাবি তোলার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এক ভয়ংকর অভিযোগ এনেছিলেন।
শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে মৃত বিজেপি কর্মীকে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে লিখেছিলেন, ‘পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার পুরুষোত্তম নগরের বাসিন্দা বিজেপির এক কার্যকর্তা সঞ্জয় বেরার মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের হেফাজতে। পুলিশ ৪ জুন তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। পরে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করাতে হয়। আবার মেদিনীপুরের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। কিন্তু তার পরে আবার ১১ জুন পিজি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। সাত দিন পরে মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়।’ ওই পোস্ট আপলোড হওয়ার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আজ কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় নিহত সঞ্জয়ের পরিবার।
মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের অভিযোগ!
আদালতকে সঞ্জয়ের পরিবার অভিযোগ জানায় যে গত ৪ জুন অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের দিন ডেবরায় তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে সঞ্জয়কে যখন গ্রেফতার করা হয়, তখন তাঁর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। অথচ তার পরের দিনই যখন সঞ্জয়কে আদালতে নিয়ে আসা হয়, তখন তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায়। তাই তাঁরা আদালতের কাছে আবেদন করে জানতে চাইছেন যে সঞ্জয় যখন পুলিশি হেফাজতে ছিল, তখন কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে তা CBI এর মাধ্যমে তদন্ত করে জানানো হোক এবং সঞ্জয়ের দেহের ময়নাতদন্তও করা হোক কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতালে।
আরও পড়ুনঃ ফের বাড়বে DA, সরকারের কাছে গেল প্রস্তাব! কপাল খুলতে চলেছে সরকারি কর্মীদের
মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের এই আবেদন বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে উঠলে তিনি মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন। জানা গিয়েছে আজ দুপুর ২ টো নাগাদ সেই মামলার শুনানি হবে। অন্যদিকে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্না দিতে চান শুভেন্দু অধিকারী। তাই এই আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি। বিচারপতি অমৃতা সিংহ ধর্না দেওয়ার জন্য কেন রাজভবনকে বেছে নিয়েছে জানতে চাওয়ায় মামলাকারী জানান, ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় নির্যাতিতদের নৈতিক সমর্থন দেওয়ার জন্যই তাঁরা রাজভবন বেছে নিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি সিংহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে ‘শাসকদলের নেতা সেখানে কর্মসূচি করেছেন বলে আপনারাও করবেন, এটা যুক্তি হতে পারে না। ধর্নার জন্য বিকল্প জায়গা ঠিক করুন।’