প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে তোমার বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অন্দরে। এই নিয়ে বার বার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। শুধু মমতা একা নন, বাংলার শাসকদল তৃণমূলও বার বার এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশনের কাছে। কিন্তু তবুও SIR প্রক্রিয়া অনড় রাজ্যে। এমতাবস্থায় আধার কার্ড নিয়ে এবার নয়া নিয়ম জারি করল কমিশন (Election Commission)। পরবর্তী যে কোনও অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে এবার আধার কার্ডকেই বাধ্যতামূলক করা হল।
অনলাইনে আধারই চাইছে কমিশন
উল্লেখ্য, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR-এর এনুমারেশন পর্বে অনলাইন ব্যবস্থায় আধার বাধ্যতামূলক করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এবার পরবর্তী যে কোনও অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে সেই আধার কার্ডকেই বাধ্যতামূলক করা হতে চলেছে। সম্প্রতি কমিশনের তরফে সকল জেলাশাসককে বলে দেওয়া হয়েছে যে ফর্ম-৬ এ নতুন নাম তোলা, ফর্ম-৭ এ মৃতের নাম বাদ দেওয়া এবং ভোটার তথ্যে সংশোধন অনলাইনে করতে হলে অবশ্যই আধার লাগবে। যদিও কাগজের ফর্মে আধার নম্বর দেওয়া ভোটারের কাছে অপশনাল থাকলেও অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হলে প্রথমে আধারের সঙ্গে ফোন নম্বর সংযুক্ত করতে হচ্ছে। এরপর আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডের নামে মিল থাকলে তবেই অনলাইনে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করা যাচ্ছে। কিন্তু এখন শুধু ফর্ম জমা করা ছাড়া নতুন নাম তোলা, সংশোধনের কাজ করা যাচ্ছে না।
কেন এই উদ্যোগ নিল কমিশন?
জানা গিয়েছে এইমুহুর্তে ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা, সংশোধনের কাজ করা যাচ্ছে না। তবে ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকে তা করা যাবে। সেক্ষেত্রেও আধারকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অর্থাৎ, তখনও কেউ অনলাইন ব্যবস্থায় নতুন নাম তুলতে বা সংশোধন করতে হলে আধারের মাধ্যমে আগে ই-সই করে নিতে হবে। আসলে এখানে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রে নানা অসাধু হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠে আসছে। নেপথ্যে আধিকারিকের একাংশের ভূমিকাও রয়েছে। তাই অনলাইন ব্যবস্থায় আধারের মাধ্যমে ই-সই নেওয়া হচ্ছে। কারণ, আধারের সঙ্গে ভোটারের ফোন নম্বর সংযুক্ত থাকে।
আরও পড়ুন: দিতে হবে ২০০ কোটি! অবসরপ্রাপ্তদের প্রাপ্য মেটাতে পারছে না কলকাতা পুরসভা
প্রসঙ্গত, এসআইআর পর্বে বার বার ‘অনুপ্রবেশ তত্ত্ব’ তুলে ধরে আসছে বিজেপি। এমনকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেও দাবি করেছেন যে এসআইআর হলে এক কোটি ভোটারের নাম বাদ যাবে। যদিও সেই সংখ্যাটা এখনও পৌঁছয়নি, তবে বাস্তবে যে সেই সংখ্যাটা পৌঁছাবে না তার কোন গ্যারান্টিও নেই। আসলে কমিশন সূত্রে খবর, প্রতি দিনই নাম বাদ দেওয়ার তথ্য আসছে। নাম বাদ যাওয়ার হিসাব যেখানে সোমবার পর্যন্ত ছিল ১০ লক্ষ। ২৪ ঘণ্টা পর তা ফের আরও কিছুটা বাড়ল। কমিশন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লক্ষ ৯২ হাজার। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এই সংখ্যা আরও বাড়বে ভবিষ্যতে।