ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত বছর চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য দেশ জুড়ে এক বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। এর পরেই আবার চন্দ্রযান-৪ মিশনের পরিকল্পনা নিয়েছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO। চাঁদের মাটিতে থেকে পাথর খুবলে আনবে চন্দ্রযান-৪।এদিকে চলতি মাসে বড় সাফল্য পেল চিন। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অদেখা অঞ্চল থেকে মাটি ও পাথর নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে চ্যাঙ্গি–৬ মহাকাশযান। আর তার রেশ কাটতে না কাটতেই বড় সিদ্ধান্ত নিল ISRO।
ISRO-র নয়া পদক্ষেপ!
গতকাল অর্থাৎ বুধবার নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া স্পেস কংগ্রেসের তরফে ISRO-র চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৩ মিশনের সাফল্যের উপর ভর করে চন্দ্রযান-৪-এর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই মিশনকে LUPEX মিশন বলে আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, এই মিশনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে পাথর সহ চাঁদের মাটি থেকে কিছু নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা। তাই চন্দ্রযান-৪ কে দু’টি ধাপে উৎক্ষেপণ করা হবে। যার জন্য ব্যবহার করা হবে দু’টি মিনি স্যাটেলাইট। সেই দু’টি স্যাটেলাইট ভিন্ন কক্ষপথে ইনজেক্ট করা হবে। প্রথম ক্ষেত্রে কাজে লাগবে LVM-3 এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে PSLV।
কী বলছেন চেয়ারম্যান এস সোমনাথ?
এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৪-এ পাঁচটি আলাদা আলাদা মহাকাশযান থাকবে। সেগুলির প্রত্যেকটির আলাদা কাজ থাকবে। যার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি কাজ হল চাঁদের মাটিতে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত ভাবে‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ করে চাঁদের মাটির নমুনা সংগ্রহ করা এবং তা সংরক্ষণ করা। এবং একটি মডিউল থেকে অন্য মডিউলে চাঁদের মাটির নমুনা পাঠিয়ে, আবার পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করা। এদিন এস সোমনাথ জানিয়েছেন, ‘আমরা চন্দ্রযান-৪ এর কনফিগারেশন এবং কীভাবে চাঁদ থেকে নমুনা পৃথিবীতে আনা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেছি। সব দিক পর্যালোচনা করে তবেই এই মিশন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে আমাদের হাতে যে সমস্ত রকেট রয়েছে, তা একটি মিশনে যেতে এবং ফিরে আসতে যথেষ্ট সক্ষম নয়। তাই আমাদের স্পেস ডকিং বা স্প্যাডেক্স করতে হবে।’
সূত্রের খবর, মিশনের চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে নির্বিঘ্নে চন্দ্রযান-৪-কে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা। আর তারপরেই চাঁদের মাটি থেকে সংগ্রহ করা পাথর ও অন্যান্য নমুনা নিয়ে নানা গবেষণা করা। জানা গেছে, নমুনা সংগ্রহের জন্য চন্দ্রযান-৪-কে চাঁদের মাটিতে ১০০ দিন রাখা হবে। এখনও পর্যন্ত তিনটি দেশ এই অভিযান করতে পারেছে। আমেরিকার অ্যাপোলো অভিযানে, সোভিয়েত ইউনিয়নের লুনা অভিযানে এবং চিনের চ্যাং অভিযান। এবার পালা ভারতের।
ISRO-র অন্যান্য পদক্ষেপ
তবে চন্দ্রযান-৪ ছাড়াও অন্যান্য গবেষণা প্রসঙ্গে, এস সোমনাথ এদিন বলেন, ‘ চলতি বছরে আমাদের সামনে তিনটি কাজ আছে। একটি হল G1 LVM3 বা গগনযানের প্রথম মনুষ্যবিহীন মিশন। দ্বিতীয়টি হল আরও একটি টেস্ট ভেহিকেলের উৎক্ষেপন (টিভি-ডি২) এবং সবশেষে প্রথম ‘প্যাড অ্যাবর্ট টেস্ট’। আমরা এই তিনটি প্রজেক্ট নিয়েই একসঙ্গে কাজ করছি, সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যে তিনটিই সম্পন্ন করা যাবে।’