ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার যতই DA বৃদ্ধি করুক না কেন, কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা বা DA-র দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করেই চলেছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। সরকারের বর্ধিত DA তে একেবারেই মন গলেনি কারোর। এদিকে কর্মীদের দাবি মানতেও নারাজ রাজ্য সরকার। তাই এবার অন্য পন্থা অবলম্বন করল রাজ্যের কর্মচারীরা। বিগত প্রায় দেড়বছর ধরে এই লড়াইয়ে লাগতে চলেছে রাজনৈতিক রং।
এর আগে বেশ কয়েকবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সভায় রাজনৈতিক নেতাদের দেখা গিয়েছিল। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের নেতারা সেখানে গিয়ে সরকারি কর্মীদের DA-র দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তবে এবার ঘটনা ঘটল উল্টো। জানা গিয়েছে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নিজে থেকেই এবার সরাসরি বিজেপি নেতার কাছে দ্বারস্থ হল। এবং তাঁদের সংগ্রামের ইস্যুকে নিয়ে রব হওয়ার আবেদন জানিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে চিঠি লিখল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
চিঠিতে কী কী দাবি করা হয়েছে?
সূত্রের খবর, শুভেন্দুকে লেখা চিঠিতে সরকারি কর্মীরা যে সব দাবি জানিয়েছেন, সেগুলি হল – পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে যেন ৪০ শতাংশ ‘বকেয়া DA’ মেটানোর দাবি তোলা হয়, DA আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকার যে সব পদক্ষেপ করেছে, তা যেন ফেরানোর জন্যে সরকারের ওপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়, পঞ্চম বেতন কমিশনের বকেয়া DA মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার যে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে, তা প্রত্যাহারের জন্যে চাপ সৃষ্টি করা হোক।
আন্দোলনরত কর্মীদের পাশে শুভেন্দু!
এর আগে শুভেন্দু অধিকারী নিজে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, অমিত শাহ নাকি নিজে থেকে পশ্চিমবঙ্গের DA আন্দোলনের ওপর নজর রাখছেন। অন্যদিকে গত শুক্রবার, বিরোধী দলনেতা হিসাবে নিজের বাড়তি বেতন ৪০ হাজার টাকা সংগ্রামী যৌথমঞ্চ সংগঠনের সদস্যদের হাতে তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
এই প্রসঙ্গে, শুভেন্দু অধিকারী জানান, ‘বিরোধী দলনেতা হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে বাড়তি বেতন আমাকে দেয়, সেই ৪০ হাজার টাকা আমি সংগ্রামী যৌথমঞ্চকে দিলাম। এর আগে ওদের অনশন মঞ্চে গিয়ে আমি বলেছিলাম, ওদের আইনি লড়াইয়ে পাশে থাকব। তাই এই সামান্য অর্থ ওদের হাতে তুলে দিচ্ছি। যদিও এটা সমুদ্রে বিন্দুর মতো। DA আন্দোলনের মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সেখানে মামলা চালাতে গেলে অনেক টাকা লাগে। ওঁরা আমাকে জানিয়েছেন, আইনজীবীদের পারিশ্রমিক এবং যাতায়াত খরচের খাতে ওই টাকা ব্যয় করা হবে।’
তীব্র নিন্দা শান্তনু সেনের!
বিরোধী দলনেতার এইরূপ কাজে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘সরকারকে বিব্রত করতে একদল লোক নাটক করছেন। তাঁদের প্রোডিউসার যে তাঁদের টাকা দেবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক।’ তবে সংগ্রামী মঞ্চের সদস্যের বিরোধী দলনেতার প্রতি এইরূপ আস্তা একপ্রকার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। যা অনেকটাই চাপে ফেলবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরকারকে।