ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দিন কয়েক আগে বাংলাদেশে, ‘রাঁধুনী-এপার ওপারের রান্না’ নামের রান্না বিষয়ক একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী তারিন জাহান। আর সেই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায়, খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। এবং সেই বিতর্কের প্রসঙ্গ হল গরুর মাংস।
আসলে সুদীপা চট্টোপাধ্যায় বাংলাদেশে একটি বিখ্যাত কুকিং শোয়ে গিয়েছিলেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষেই সেটির আয়োজন করা হয়। সেখানেই ওপারের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারিন গরুর মাংসের একটি রান্না করেন। এবং তিনি বলে বসেন, “আমি আপনার জন্য এবার রান্না করে দেখাবো গোরুর মাংসের কোফতা।” তারপরই তিনি শুধরে নেন। বলেন, “দর্শকদের উদ্দেশ্যে রান্না করে দেখাবো।”
গো-মাংস বিতর্কে সরাসরি মুখ খুললেন সুদীপা
কিন্তু এই বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেননি নেটিজেনরা। কারণ সুদীপা একজন হিন্দু। আর হিন্দু হয়ে গো-মাংসকে ‘প্রোমোট’ করছেন বলে অভিযোগ করে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করছেন তারা। রীতিমত ‘জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা’র হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ছাড় পায়নি তাঁর মৃত মা ও কোলের সন্তান আদিদেবও। ঘটনার প্রতিক্রিয়া এমন হিংসাত্মক দেখে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাইভেও এসেছিলেন সুদীপা। তিনি বলেছিলেন, “আমি ক্ষমাপ্রার্থী আপনাদের আবেগে আঘাত দেওয়ার জন্য। আগামী দিনে মাথায় রেখে চলব। আমার না সত্যি মাথায় আসেনি এটা হতে পারে। আমি ওই মাংস খেয়েছি কী না তা না জেনেই অনেকেই নানা মন্তব্য করছেন। আসলে গোমাংস বাংলাদেশের জাতীয় খাদ্যের তালিকায় পড়ে। আমি কারোর ধর্মীয় রুচিতে বাধা দিতে পারি না। আমি যদি নিজের ধর্মকে সম্মান করি, তাহলে অন্যের ধর্মাচরণে বাধা দিতে পারি না।”
পরিবারকে নিয়ে ভয়ের আতঙ্ক সুদীপার
কিন্তু এর পরেও অনেক হুমকি এবং প্রাণনাশের কথাও তাঁকে শুনতে হয়। এবার সেই নিয়ে সরাসরি এক সংবাদসংস্থার সঙ্গে কথা বলেন। এইমুহুর্তে তাঁর মনের ঠিক কী অবস্থা তা জানতে চাওয়ায় সুদীপা জানান, ’ভাল থাকার চেষ্টা করছি। আমার ছেলেটাকে আজ এতদিন হল স্কুলে পাঠাতে পারিনি। দেখি কিছু দিন পর হয়তো পাঠাতে পারব। পুলিশ খুব সাহায্য করছে। ওরা জানিয়েছেন নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করবে।’ আপাতত বিতর্ক ভুলে নতুন ভাবে বাঁচার চেষ্টায় আছেন তিনি। তবুও ভয় ও আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না গোটা পরিবারের।