ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারির আগের দিন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিলাসবহুল আবাসন থেকে চুলচেরা তদন্তে ED, ২০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করে। আর সেই সূত্রেই রাতভর ED-র জেরার মুখে পড়েন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে চলেছিল ম্যারথন তল্লাশি। সেই সময় তিনি যে শুধু শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তা কিন্তু নয়। তিনি পরিষদীয় মন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য ২০২২ এর ২৮ জুলাই শাসক দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
কোটি কোটি টাকা উদ্ধার ফ্ল্যাট থেকে
সূত্রের খবর, গ্রেফতারির আগে ও পরে পার্থের ‘বান্ধবী’ বলে পরিচিত অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল টাকার পাহাড়। তার মধ্যে অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে ২২ কোটি এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। শুধু তাই নয়, ওই দুই ফ্ল্যাট থেকে বিদেশি মুদ্রা এবং সোনাও উদ্ধার করেছিল ED। সঙ্গে বেগমপুরের পুঁড়ির বাগানবাড়িতে তিন বিঘা জমির উপর দোতলা বাড়ির হদিশও মিলেছে। ভিতরে পুকুর ও স্নানঘাট আছে। এদিকে সেই সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয় নিয়ে সম্প্রতি আদালতে পার্থর আইনজীবী দাবি চাঞ্চল্য তৈরি করেদিয়েছে। পার্থর আইনজীবী দাবি করেন, ‘অর্পিতাকে অবশ্যই চিনতেন পার্থ। তার মানে এই নয় যে অর্পিতার সম্পত্তির সঙ্গে পার্থর যোগ থাকবে।’
ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়ে বড় মন্তব্য পার্থর আইনজীবীর!
এছাড়াও পার্থর আইনজীবী আরও দাবি করেন যে, ‘পার্থর বাড়ি থেকে টাকা ও গয়না উদ্ধার হয়নি। উদ্ধার হয়েছে একটি সরকারি ডায়েরি ও একটি সরকারি খাম। শুধুমাত্র এই দুইয়ের ভিত্তিতে এটা কখনই প্রমাণ করা যায় না যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত।’ যদিও আদালতে আগাগোড়াই পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা দাবি করে এসেছেন যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তাঁর ফ্ল্যাটে রাখা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ ওই টাকা। এবার তাই উদ্ধার হওয়া ওই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস জানতে নেওয়া হল এক বড় পদক্ষেপ।
সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সূত্রে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ওই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস জানতে এবার জেলে গিয়ে পার্থর বান্ধবী অর্পিতাকে জেরা করতে চান আয়কর দফতরের বেনামি সম্পত্তি শাখার আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে আদালতে আবেদন জানিয়েছে আয়কর দফতর। এমনকি আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে গিয়ে অর্পিতাকে জেরা করার জন্য অনুমতিও দিয়ে দিয়েছে আদালত। ফলে শীঘ্রই এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হতে চলেছে।